পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১২৭

বিশিষ্ট ভারতীয় চিকিৎসক চীনের বিখ্যাত অষ্টম রুট্ বাহিনীর সহিত থাকিয়া চীনা জনগণের স্বাধীনতার যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। হরিপুরা অভিভাষণে তিনি ভবিষ্যৎ ভারতের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা সম্বন্ধে ঘোষণা করেন, “কেবলমাত্র সোস্যালিষ্ট পদ্ধতির দ্বারাই দারিদ্র্য মোচন, নিরক্ষরতা ও ব্যাধি দূরীকরণ এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা সম্পর্কিত আমাদের প্রধান প্রধান জাতীয় সমস্যাগুলির সমাধান হইতে পারে।” ভারতবর্ষে এরূপ রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের জন্য হরিপুর কংগ্রেসেই তিনি এক কমিশন নিয়োগের প্রস্তাব করেন। এই কমিশন ভারতবর্ষের কৃষি ও শিল্প ব্যবস্থাকে উৎপাদন ও ব্যবহারের উভয়ক্ষেত্রেই সমাজতান্ত্রিক নীতি অনুযায়ী পুনর্গঠিত করিতে ভবিষ্যৎ জাতীয় সরকারকে সুপারিশ করিবে; কারণ,—‘a comprehensive scheme of industrial development under state-ownership and state-control will be indispensable.’ পরে তাঁহারই নেতৃত্বে এই কমিশন গঠিত হইয়া “ন্যাশনাল প্লানিং কমিটি” নামে পরিচিত হয়। এই ‘জাতীয় পরিকল্পনা কমিটি’ গঠনে সুভাষচন্দ্র যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়াছেন তাহার তুলনা কংগ্রেসের ইতিহাসে বিরল। এতদ্ভিন্ন, তাঁহারই চেষ্টায় বহুদিনের বাঙালী-বিহারী সমস্যারও সন্তোষজনক সমাধান হয়। রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্রের সভাপতিত্বে ওয়ার্কিং কমিটির বার্দ্দৌলী অধিবেশনে যে প্রস্তাব গৃহীত হয় তাহার মর্ম এই—১) ভারতের যে কোন প্রদেশে যে কোন ভারতীয় চাকুরি পাইতে পারিবেন। (২) বিহারী ও বিহারে প্রবাসী বাঙালীদের মধ্যে কোন ব্যাপারে কোনরূপ বৈষম্য থাকিবে না। (৩) ডোমিসাইল্ড সার্টিফিকেট্ প্রথা রহিত হইবে। (৪) চাকুরী প্রার্থীরা আবেদনপত্রে অধিবাসী অথবা ডোমিসাইল্ড বলিয়া উল্লেখ করিবেন। (৫) যে কোন ব্যক্তি দশ বৎসর কোন প্রদেশে বাস করিলেই ঐ প্রদেশে ডোমিসাইল্ড বলিয়া গণ্য হইবেন।