পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

দ্বন্দ্ব হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইতে প্রস্তুত আছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, বর্ত্তমান সঙ্কটকালে একজন প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কংগ্রেস সভাপতির নির্বাচন অপরিহার্য্য। দক্ষিণপন্থীরা যদি প্রকৃতই জাতীয় ঐক্য চাহেন, তবে একজন বামপন্থীকে সভাপতি নির্বাচন করিতে রাজী হওয়া তাঁহাদের পক্ষে সঙ্গত হইবে।”

 ২৯শে জানুয়ারী রবিবার সভাপতি নির্ব্বাচনের দিন ধার্য হয়। ঠিক তিন দিন পূর্ব্বে ২৬শে জানুয়ারী সুভাষচন্দ্র যে বিবৃতি প্রচার করেন তাহাতেও তিনি দক্ষিণপন্থীদের কংগ্রেসের মধ্যে বিভেদসৃষ্টির এই অশুভ প্রচেষ্টা যাহাতে পরিত্যক্ত হয় তাহার জন্য আকুল আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই শেষ মুহূর্ত্তেও যদি তাঁহারা একজন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী সভাপতি নির্বাচিত করিতে সম্মত হন, তাহা হইলে এখনই এই বিরোধের অবসান ঘটিবে। আমার নিজের কথা আমি পূর্বেই ঘোষণা করিয়াছি। আসল প্রশ্ন হইল যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে। যদি কোন প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধীকে সভাপতি নির্ব্বাচিত করা হয়, তবে সানন্দে আমি তাঁহার অনুকুলে সরিয়া দাঁড়াইব।” সুভাষচন্দ্র দেশবাসীকে এই বলিয়া সতর্ক করিয়া দেন যে, যদি নির্ব্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই অনিবার্য্য হইয়া উঠে তাহা হইলে কংগ্রেসের মধ্যে ভেদসৃষ্টির সম্পূর্ণ দায়িত্ব দক্ষিণপন্থীদের উপর পড়িবে—তাঁহারা কি সে দায়িত্ব গ্রহণে স্বীকৃত হইবেন, না প্রগতিশীল কর্মপন্থার ভিত্তিতে কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ ঐক্য ও সংহতি অটুট রাখাই বাঞ্ছনীয় মনে করেন? কিন্তু দক্ষিণ পন্থী নেতৃবর্গ তাহাতে কর্ণপাত করিলেন না। দুই পদপ্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলিতে লাগিল।

 ১৯২৯ সালের লাহোর কংগ্রেসের সময় হইতেই মহাত্মাগান্ধীর অভিপ্রায় ও নির্দ্দেশক্রমেই কংগ্রেসের সভাপতি নির্ব্বাচিত হইয়া আসিতেছে। মহাত্মার নির্দ্দেশ অনুসারে সভাপতি নির্বাচন এক প্রকার