পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৪৩

কংগ্রেসের ইতিহাসে গান্ধীযুগের যবনিকাপাত হইল বলিয়া বিদ্রূপ করিতেও ছাড়ে নাই। এই শ্রেণীর অনিষ্টকারী সমালোচকদের ভেদসৃষ্টিকর উক্তির প্রতিবাদে সুভাষচন্দ্র শীঘ্র এক বিবৃতি প্রচার করিয়া ঘোষণা করিলেন, “সমস্ত সময় আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকিবে মহাত্মার বিশ্বাস অর্জ্জন করা; কারণ, অন্য সকলের আস্থা লাভ করিয়াও যদি মহাত্মার বিশ্বাসভাজন হইতে না পারি তবে আমার পক্ষে তাহা অত্যন্ত পরিতাপের বিয়য় হইবে।”

 সুভাষচন্দ্রের এই সকল বিবৃতির পরে সকলেই আশা করিয়াছিল যে দক্ষিণপন্থীরা তাঁহাদের এই পরাজয়কে সহজভাবেই গ্রহণ করিবেন। কিন্তু, এই সময়ে একান্ত অপ্রত্যাশিতভাবে মহাত্মাজী যে বিবৃতি প্রচার করিলেন তাহাতে বিরোধ আরও তীব্র ও শোচনীয় হইয়া উঠিল। কাহারও জানিতে বাকী রহিল না যে গান্ধীজীর আন্তরিক সমর্থন ছিল ডাঃ পট্টভির দিকে এবং সুভাষচন্দ্রের জয়লাভে তিনি সন্তুষ্ট হইতে পারেন নাই। মহাত্মা গান্ধীর সম্পূর্ণ বিবৃতিটি এই:—“শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসু তাঁহার প্রতিদ্বন্দ্বী ডাঃ পট্টভি সীতারামিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামে সুস্পষ্টরূপেই জয়লাভ করিয়াছেন। আমাকে স্বীকার করিতে হইবে যে, গোড়া হইতেই আমি তাঁহার (সুভাষচন্দ্রের) পুননির্ব্বাচনের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলাম। ইহার কারণ এস্থলে বর্ণনা করিবার প্রয়োজন নাই। নির্ব্বাচনী প্রচারপত্রে তিনি যে সকল তথ্য ও যুক্তি প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহা আমি সমর্থন করি না। আমি মনে করি যে, সহকর্ম্মীদের কথা তিনি যে ভাবে উল্লেখ করিয়াছেন তাহা তাঁহার পক্ষে অযৌক্তিক ও অশোভন হইয়াছে। তথাপি তাঁহার জয়লাতে আমি আনন্দিত। মৌলানা সাহেব তাঁহার নাম প্রত্যাহার করিবার পর আমার চেষ্টাতেই ডাঃ পট্টভি নির্ব্বাচন হইতে সরিয়া দাঁড়ান নাই। অতএব এই পরাজয় তাঁহার অপেক্ষা আমারই অধিক। আমি যদি সুস্পষ্ট নীতি