পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

করিয়া বাহির হইবেন না; কার্য্যকরীভাবে দেশের অধিকতর সেবা করার উদ্দেশ্য লইয়াই তাঁহারা বাহিরে আসিবেন।”

 মহাত্মা গান্ধীর এই বিবৃতির উত্তরে রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্র বসু নিম্নলিখিত বিবৃতি প্রদান করেন:—

 “সম্প্রতি কংগ্রেসের সভাপতি নির্ব্বাচন সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধী যে বিবৃতি প্রদান করিয়াছেন তাহা আমি বিশেষ মনোযোগের সহিত পাঠ করিয়াছি। নির্ব্বাচন প্রতিযোগিতায় ডাঃ পট্টভি সীতারামিয়ার পরাজয়কে মহাত্মা গান্ধী স্বকীয় পরাজয় বলিয়া গণ্য করিয়াছেন দেখিয়া আমি অত্যন্ত মর্মাহত হইয়াছি। তাঁহার প্রতি যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শন পূর্ব্বক আমি এই বিষয়ে তাঁহার সহিত ভিন্নমত হইতে চাই! ভোটদাতাগণ অর্থাৎ প্রতিনিধিগণ মহাত্মা গান্ধীর স্বপক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ হন নাই। অতএব, আমার এবং অধিকাংশ লোকের মতে নির্বাচন প্রতিযোগিতার ফলাফল ব্যক্তিগত ভাবে তাঁহার জয় পরাজয়ের সূচক নহে।

 কংগ্রেসের বাম ও দক্ষিণপন্থীদের লইয়া কয়েকদিন যাবৎ অনেকে অনেককিছু বলাবলি করিয়াছেন, সংবাদপত্রেও অনেককিছু প্রকাশিত হইয়াছে। অনেকেই সভাপতি নির্ব্বাচনের ফলকে বামপন্থীদের জয় বলিয়া ধরিয়া লইয়াছেন। আমার বক্তব্য এই যে, এই নির্ব্বাচনের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করিতে যাইয়া যেন আমরা অতিরিক্ত কল্পনাশক্তির আশ্রয় গ্রহণ না করি বা অতিরিক্ত রং ফলাইয়া না ফেলি। তর্কের খাতিরে যদি ধরিয়া লওয়া যায় যে, নির্বাচন ব্যাপারে বামপন্থিগণেরই জয় হইয়াছে, তাহা হইলেও বর্ত্তমানে আমাদিগকে বামপন্থিগণের কার্য্যপ্রণালী সম্বন্ধে বিবেচনা করিতে হইবে। বামপন্থিগণ কংগ্রেসের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির দায়িত্ব স্কন্ধে লইবেন না। যদি বিভেদের সৃষ্টিই হয়, তাহা হইলে তাঁহাদের কার্য্যকলাপের জন্যই যে এইরূপ হইবে তাহা নহে, বিভেদ নিবারণে তাঁহারা চেষ্টা করিলেও বিভেদের সৃষ্টি হইবে।