পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৪৭

 কংগ্রেসের মধ্যে দলগত বিরোধের যে ধুয়া উঠিয়াছে, আমি তাহার কোন যুক্তি ও কারণ খুঁজিয়া পাইতেছিনা। তবু যদি কোনদিন এইরূপ কোন বিরোধ অনিবার্য্য হইয়া উঠে তবে আমি আমার সমস্ত শক্তি নিয়োগ করিয়া তাহার গতিরোধ করিতে চেষ্টা করিব। আমাদের ভবিষ্যৎ নীতি সম্পর্কে আমি এই কথাই বলিতে চাই যে, আমাদের নির্ব্বাচন-প্রতিশ্রুতি ও পার্লামেণ্টারী কার্য্যসূচি আমরা ভবিষ্যতে অধিকতর যত্নের সহিত সাফল্যমণ্ডিত করিয়া তুলিব। যুক্তরাষ্ট্র প্রবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিবার জন্য এবং পূর্ণ স্বরাজের পথে অগ্রসর হইবার জন্য আমাদের সমস্ত শক্তি কেন্দ্রীভূত হইবে এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নীতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রক্ষা করিয়াই আমরা আমাদের গন্তব্য পথে অগ্রসর হইব। এই সম্পর্কে আমি ইহাও বলিতে চাই যে, মহাত্মাজীর সহিত আমার মতানৈক্যের জন্য আমি গভীর বেদনা অনুভব করিতেছি। কিন্তু একথা খুবই সত্য যে, মহাত্মাজীর ব্যক্তিত্বের নিকট সর্ব্বদাই আমি আমার মস্তক আনত করিতে গৌরব অনুভব করিব। আমার সম্পর্কে মহাত্মা কিরূপ মত পোষণ করেন তাহা আমি জানি না। কিন্তু তাঁহার মতামত যাহাই হউক না কেন, তাঁহার বিশ্বাস ভাজন হওয়ার জন্য আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকিব। অন্যান্য সকলের আস্থা অর্জ্জন করিয়া আমি যদি ভারতের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ মানবের আস্থা লাভ করিতে না পারি, তাহা হইলে উহা আমার পক্ষে বিশেষ পরিতাপের বিষয় হইবে।”

 মহাত্মাজীর বিবৃতি প্রচারের ফলে অবস্থার উন্নতি হওয়া ত দূরের কথা পরিস্থিতি অধিকতর জটিলাকার ধারণ করিল। এমন কি উক্ত বিবৃতি প্রদানের ফলে যে সংকটময় পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছিল তাহাই শেষ পর্য্যন্ত সুভাষচন্দ্রকে সভাপতিপদে ইস্তফা দিয়া ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গঠন করিতে বাধ্য করিয়াছিল—ইহাই অনেকের ধারণা। আসল কথা, মহাত্মাজীর বিবৃতিকে তাঁহার অনুচরবর্গ ঠিক মহাত্মার দৃষ্টি দিয়া