পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রস্তাবনা

 ১৯২৮ সালের কলিকাতা কংগ্রেস। কলিকাতাবাসী এরূপ দৃশ্য পূর্ব্বে কখনও প্রত্যক্ষ করে নাই। কংগ্রেস অধিবেশন সম্পর্কে এত উৎসাহ, এত উদ্দীপনা, এত সমারোহ আর কোনদিন হইয়াছে কিনা সন্দেহ। রাষ্ট্রপতি পণ্ডিত মতিলাল নেহেরু হাওড়া স্টেশনে ট্রেণ হইতে অবতরণ করিলেন। ষ্টেশনের বাহিরে বিপুল জনতা—লক্ষ লক্ষ নরনারী, আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই দেশ-নায়ককে সম্বর্দ্ধনা জানাইতে আসিয়াছে। রাষ্ট্রপতির শোভাযাত্রার জন্য রাজকীয় ব্যবস্থা হইয়াছে। বিংশতি অশ্ববাহিত শকটে সভাপতি অধিবেশন মণ্ডপের দিকে চলিলেন। অগণিত নর-নারী শোভাযাত্রার অনুগমন করিতেছে। এরূপ বিরাট শোভাযাত্রা কংগ্রেসের ইতিহাসে অভূতপূর্ব্ব। শোভাযাত্রা কংগ্রেস মণ্ডপের দিকে চলিল। মণ্ডপের নিকট বিরাট প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হইয়াছে। বিশাল সভামণ্ডপে অধিবেশনের প্রতিনিধি এবং দর্শকদের বসিবার আসন নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে। পণ্ডিত মতিলালকে লইয়া শোভাযাত্রা অধিবেশন মণ্ডপে উপস্থিত হইল। কিন্তু এই অপূর্ব্ব শোভাযাত্রাকেও যেন ম্লান করিয়া দিল পতাকা উত্তোলনের উৎসবে সামরিক কুচকাওয়াজ। কংগ্রেস অধিবেশন সম্পর্কে সহস্র সহস্র বাঙালী যুবক স্বেচ্ছাসেবকদলভুক্ত হইয়াছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে অতি আড়ম্বরের সহিত নিখুঁতভাবে সামরিক কুচকাওয়াজ শিক্ষা দেওয়া হইয়াছিল। পণ্ডিত মতিলাল অগ্রসর হইয়া জাতীয় পতাকা উত্তোলন করিতেই আরম্ভ হইল অভিবাদন কুচ। দলে দলে স্বেচ্ছাসেবকগণ পতাকাকে অভিবাদন করিয়া ‘মার্চ’ করিয়া চলিয়াছে। পতাকার তলে কংগ্রেস সভাপতি পণ্ডিত মতিলাল খদ্দরের ধুতি পাঞ্জাবি পরিয়া সামরিক কায়দায় অভিবাদনের ভঙ্গিতে