পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

নাই। ফলতঃ, কংগ্রেসের উচ্চমণ্ডলের নিকট সুভাষচন্দ্রের অসুস্থতার সংবাদ অবিশ্বাস্য বোধ হইয়াছিল। তাঁহাদের এরূপ আচরণ যে গভীর ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধিমূলক তাহার পরিচয় কিছুদিন পূর্বে ওয়ার্দ্ধায় ওয়ার্কিং কমিটির অধিবেশন সংক্রান্ত ব্যাপারেই পাওয়া গিয়াছে। কোন কোন কংগ্রেস নেতার সন্দেহজনক কৌতুহল প্রকাশে বিরক্ত হইয়া সুভাষচন্দ্রের চিকিৎসকগণ সরকারী মেডিক্যাল বোর্ডের শরণাপন্ন হইলেন। মধ্য প্রদেশ ও বেরারের বেসামরিক হাসপাতাল সমূহের Inspector-General, মধ্যপ্রদেশ ও বেরারের Director of Public Health ও জব্বলপুরের সিভিল সার্জ্জনকে লইয়া এই বোর্ড গঠিত হয়। এই বোর্ডের যুক্ত রিপোর্টে যখন সুভাষচন্দ্রের অসুস্থতার সংবাদ সমর্থিত হইল তখন হইতে অবস্থার কতকটা পরিবর্ত্তন হইতে থাকে। জামদোবা হইতে সুভাষচন্দ্র My strange illness নাম দিয়া একটি প্রবন্ধ লিখেন, উহা ১৯৩৯ সালের Modern Review’র এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধ পাঠে সুভাষচন্দ্রের অসুস্থতার বিস্তৃত বিবরণ অবগত হওয়া যায়। সুভাষচন্দ্রের হিতৈষী বন্ধুদের কেহ কেহ তাঁহার এই অসুস্থতার কারণ ‘বিষ-প্রয়োগ’ বলিয়া বেশ গাম্ভীর্য্যের সহিত মন্তব্য করেন। সুভাষচন্দ্র এইরূপ সিদ্ধান্তকে কল্পনাবিলাসী উর্ব্বর মস্তিষ্কের পরিচায়ক বলিয়া হাসিয়াই উড়াইয়া দেন। সংস্কৃতজ্ঞ জ্যোতির্ব্বিৎ পণ্ডিতেরাও অনুরূপ কল্পনাশক্তি প্রভাবে ‘তান্ত্রিক প্রথায় মারণ-ক্রিয়ার প্রয়োগ করা হইয়াছে’ বলিয়া মত প্রকাশ করেন। বিশেষ গবেষণালব্ধ এই সমস্ত কৌতুহলোদ্দীপক কাহিনীকে সুভাষচন্দ্র মোটেই আমল দিতেন না।

 ত্রিপুরী অধিবেশনে কংগ্রেসের এক অধ্যায় সমাপ্ত হইয়া সম্পূর্ণ এক নূতন অধ্যায়ের সূত্রপাত হয়। এই অধিবেশনের গুরুত্ব সম্বন্ধে পূর্ণমাত্রায় অবহিত ছিলেন বলিয়াই শারীরিক অসুস্থতায় ভ্রূক্ষেপ না করিয়া তিনি ত্রিপুরী অধিবেশনে যোগদান করেন। ত্রিপুরীতে পণ্ডিত জওহরলাল