পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৬৫

ন্যায়সঙ্গত অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হইয়াছে এবং কংগ্রেস সভাপতিকে মহাত্মা গান্ধীর ‘রবার ষ্ট্যাম্পে’ পরিণত করা হইয়াছে। গান্ধীজীকে কংগ্রেসের একচ্ছত্র অধিনায়ক করাই যদি গান্ধীবাদীদের আসল উদ্দেশ্য হয়, তবে গান্ধীজীকে কংগ্রেসের আজীবন সভাপতি (Life President) করিয়া রাখিলেই লেঠা চুকিয়া যাইত—নির্ব্বাচনের প্রহসন করিবার প্রয়োজন হইত না।

 কংগ্রেসের নিয়মতন্ত্র অনুসারে আইনসঙ্গত ভাবেই রাষ্ট্রপতি পন্থপ্রস্তাবকে বিধিবহির্ভূত বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিতেন, কিন্তু শুধুমাত্র নিয়ম শৃঙ্খলার দোহাই দিয়া প্রস্তাবটিকে বাতিল করিয়া দেওয়াকে তিনি কাপুরুষোচিত ও গণতন্ত্র-বিরোধী কাজ বলিয়া মনে করিলেন। উপরন্তু তিনি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে এই প্রস্তাবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলিয়া এই প্রস্তাবের আলোচনাকেই তিনি প্রাধান্য দিলেন। দক্ষিণপন্থীরা পূর্ব হইতেই প্রস্তুত হইয়াছিলেন — ঐ দিন দক্ষিণপন্থীদেরই জয় হইল। সুভাষচন্দ্র যাহাদের উপর একান্তরূপে নির্ভর করিতেন তাহারাই শেষমুহূর্ত্তে বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া বিপক্ষদলের জয়লাভে সহায়তা করিলেন। ঐক্যের দোহাই দিয়া অপরাপর বামপন্থীদলগুলি ঐক্য-প্রতিষ্ঠার মূলে কুঠারাঘাত করিল। জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে কংগ্রেস সমাজতন্ত্রীদল ও সাম্যবাদীদল নিরপেক্ষ রহিল—এইরূপে বামপক্ষের সংহতি নষ্ট হইল। পণ্ডিত জওহরলালের হাতে যন্ত্রস্বরূপ থাকিয়া জয়প্রকাশ নারায়ণ নিখুঁত অভিনয় করিলেন। বাঙলার মধ্যে আজিকার বহুনিন্দিত মানবেন্দ্র নাথ রায়ই কেবল সেদিন সুভাষচন্দ্রের পক্ষে দক্ষিণপক্ষের বিরুদ্ধে লড়িয়াছিলেন।

 পন্থ-প্রস্তাব সম্পূর্ণরূপে গণতন্ত্রবিরোধী। গণতন্ত্রের নামে এই গণতন্ত্র বিগর্হিত কার্য্যের নিদর্শন অতি অল্পই দেখা যায়। ইতিপূর্বে সর্দার প্যাটেল প্রমুখ নেতৃবর্গের আচরণে সাধারণ ভদ্রতাজ্ঞান ও শালীনতাবোধের