পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

অভাব দেখা গিয়াছিল, কিন্তু ত্রিপুরীতে তাঁহারা নির্বাচিত সভাপতিকে অন্যের কর্ততৃত্বাধীনে আনিবার হীন অভিসন্ধিমূলক নিয়মবহির্ভূত এক অদ্ভুত প্রস্তাব উপস্থিত করিয়া যে ঘৃণিত মনোবৃত্তির পরিচয় দিলেন তাহা কংগ্রেসের গৌরবময় অতীতকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করিয়া গণতন্ত্রের স্থলে একনায়কত্বের প্রতিষ্ঠা করিল। বস্তুতপক্ষে সেদিন কংগ্রেসের অধিবেশনে অনেক দক্ষিণপন্থী নেতাই একনায়কত্বের অজস্র প্রশংসা করিয়া গুরুগম্ভীর বক্তৃতা করিলেন। পন্থজী মুক্তকণ্ঠে মুসোলিনীর ফ্যাসিষ্ট নীতির ভূয়সী প্রশংসা করিয়া ডিক্‌টেট্‌রসীপকেই একমাত্র প্রয়োজনীয় অস্ত্র হিসাবে ব্যাখা করিলেন। বক্তারা এক বাক্যে ঘোষণা করিলেন, কংগ্রেসই মহাত্মা—মহাত্মাই কংগ্রেস। সত্যমূর্ত্তি মহাত্মাকে ভগবানের অবতাররূপে বর্ণনা করিলেন। রাজাগোপালাচারী সুস্পষ্ট ভাবে জানাইয়া দিলেন, কংগ্রেস রাষ্ট্রতরীর মহাত্মাই একমাত্র সার্থক কর্ণধার। অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি শেঠ গেবিন্দদাস অধিকতর কল্পনাশক্তির পরিচয় দিয়া বলিলেন, মহাত্মার স্থান কংগ্রেসের উপরে— ফ্যাসিষ্টদের মধ্যে মুসোলিনীর যে স্থান,নাৎসীদের মধ্যে হিটলারের যে স্থান, কম্যুনিষ্টদের মধ্যে ষ্ট্যালিনের যে স্থান কংগ্রেসীদের মধ্যে গান্ধীজীর স্থানও ঠিক সেরূপ। গান্ধীজীকে সকলেই ভারতবর্ষের Non-violent Dictator বলিয়া ঘোষণা করিলেন। গান্ধী ডিক্‌টেটরের প্রশংসায় দিঙমণ্ডল মুখরিত হইল। ‘মহাত্মাজী কী জয়! হিন্দুস্থান কী হিট্‌লার কী জয়!’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস বিদীর্ণ করিয়া তুলিল। গান্ধীবাদী দক্ষিণ পন্থীদের বিজয় উল্লাসের এইরূপ অর্থহীন প্রলাপোক্তি গান্ধীজীর কর্ণগোচর হইলে তিনি কি মনে করিতেন ভাবিয়া কৌতুক বোধ হইতেছে। গান্ধীজীর সহিত হিটলার-মুসোলিনীর তুলনা কতদুর অশোভন তাহা একবার গান্ধীজীর সুস্থমস্তিষ্কে ভাবিয়া দেখা উচিত ছিল। ত্রিপুরীতে অভিমন্যুবধের পালা সমাপ্ত করিয়া প্রধান উদ্যোক্তা সর্দার