পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রসের সভাপতি পদ ত্যাগ করায় কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথ পুরী হইতে তারযোগে তাঁহাকে অভিনন্দন জানাইয়াছেন—“অত্যন্ত বিরক্তিকর ও উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থার মধ্যে পড়িয়াও তুমি যে স্থৈর্য্য ও মর্য্যাদা বোধের পরিচয় দিয়াছ তাহাতে তোমার নেতৃত্বের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের উদ্রেক হইয়াছে। আত্মসম্মান রক্ষার জন্য বাঙ্‌লাকে এখনও সম্পূর্ণরূপে ধীরতা ও ভদ্রতাবোধ অব্যাহত রাখিতে হইবে। তাহা হইলেই আপাত দৃষ্টিতে যাহা তোমার পরাজয় বলিয়া মনে হইতেছে তাহাই চিরন্তন জয়ে পরিণত হইবে।”

 সুভাষচন্দ্র সভাপতির পদ ত্যাগ করিলেন। ওয়ার্কিং কমিটির প্রবীণতম সদস্যা সরোজিনী নাইডুকে সভানেত্রীর আসনে বসাইয়া দক্ষিণপন্থীরা লুণ্ঠিতদ্রব্য অশোভন ব্যস্ততার সহিত আত্মসাৎ করিতে লাগিয়া গেলেন! পণ্ডিত জওহরলাল অবশ্য সুভাষচন্দ্রকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে পুনর্ব্বিবেচনা করিতে অনুরোধ করিয়া এক প্রস্তাব উপস্থিত করিলেন, কিন্তু এই প্রস্তাবের যে কোন ফল হইবে না তাহা একরূপ অবধারিতই ছিল। সুভাষচন্দ্রের পদত্যাগ পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত না হইতেই ঐ দিনই নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদকে সভাপতি নির্ব্বাচিত করিলেন। রাজেন্দ্রপ্রসাদ কেবল দক্ষিণপন্থীদের লইয়াই ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিলেন। মিঃ এম, এস্ অ্যানি ও মিঃ এম, এন্, রায় Point of Order তুলিতে গেলে তাঁহাদিগকে বক্তৃতা করিবার সুযোগই দেওয়া হইল না।

 মহাত্মার ইচ্ছানুসারে ওয়ার্কিং কমিটি মনোনয়ন হইয়াছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে ডাঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ বলেন, পন্থ-প্রস্তাব তাঁহার উপর প্রযোজ্য নহে! নেহাৎ চক্ষুলজ্জাবশতঃ পণ্ডিত জওহরলাল প্রথমে ওয়ার্কিং কমিটির সভ্যপদ গ্রহণ করিলেন না—নিরপেক্ষ রহিলেন। কয়েকমাস পরেই অবশ্য তিনি ওয়ার্কিং কমিটিতে প্রবেশ করেন।