পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

সময় এমনও হয় যে, দক্ষিণ পক্ষের সহিত আপোষ ও সহযোগিতা সহায়েই বামপক্ষ শক্তিসংগ্রহ ও প্রভাব বিস্তার করে। আবার বিভিন্ন প্রকার অবস্থায় এইরূপ সম্ভব নাও হইতে পারে। তখন, দক্ষিণ-পক্ষের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া ও প্রসার ও প্রতিপত্তিলাভে তৎপর হওয়াই বামপন্থী দলের কর্ত্তব্য। এইরূপ অবস্থায়, বেদনাদায়ক হইলেও সুস্পষ্ট বিরোধ বস্তুতঃপক্ষে প্রগতির সহায়ক ও অপরিহার্য্যও বটে। সাংগঠনিক বিকাশের ফলে একটি বামপক্ষের আবির্ভাব ও বৃদ্ধি স্বাভাবিক নিয়মেই অনিবার্য হইয়া উঠে। সহযোগিতার সহায়েই অথবা সংঘর্ষের ভিতর দিয়াই হউক বামপক্ষ বিকাশলাভ করিতে করিতে অবশেষে সমগ্র প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকার করিয়া লয় অথবা দক্ষিণপন্থীদিগকে নিজের দলে টানিয়া আনে। এই সাফল্য লাভের পরে বামপন্থীদের (অধুনা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল) বিকাশের সম্ভাবনা নিঃশেষ হইয়া গেলে, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে, এবং নূতন বামপক্ষ জন্মলাভ করিয়া কালক্রমে প্রাক্তন বামপন্থীদের বিতাড়িত করে।

 ১৯২০ সালের গান্ধীপন্থীদল কংগ্রেসে বামপন্থী থাকিলেও বর্ত্তমানে আর তাহারা বামপন্থী নয়। প্রায়ই দেখা যায়, গতকল্যকার বামপন্থীরা আগামীকল্যের দক্ষিণপন্থীতে পরিবর্ত্তিত হয়।

 আজিকার কংগ্রেসের মধ্যে দক্ষিণ ও বামপক্ষের কোন প্রভেদ রাখা উচিত নয়, বর্ত্তমানে সমগ্র কংগ্রেসই একটি বামপন্থী প্রতিষ্ঠান—এই ধরণের কথা বলা চূড়ান্ত নির্বুদ্ধিতা। এমন একটি সন্ধিক্ষণে আমরা উপস্থিত যখন অপ্রীতিকর হইলেও আমাদিগকে বাস্তব সত্যের সম্মুখীন হইতে হইবে।

 ৬। ১৯৩৬ ও ১৯৩৮ সালের মধ্যে কংগ্রেসের বামপন্থীদল দক্ষিণপন্থীদের সহিত সহযোগিতা রক্ষা করিয়া বিকাশলাভ করিয়াছে। ১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণপন্থীদের তরফ হইতে এই চীৎকার উঠিল যে,