পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

সমর্পন করিতে পারিতাম যদি দক্ষিণপন্থীদল এখনও সংগ্রামশীল ও প্রগতিমুখী কর্মপন্থা গ্রহণ করিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে মহাত্মা গান্ধীর সহিত আমার যে পত্রালাপ হইয়াছে, তাহা হইতে ইহা সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হইবে যে, আসন্ন সংগ্রামের দিক হইতে গান্ধীজী এখন আর চিন্তা করিতেছেন না। কংগ্রেসী মন্ত্রিগণ ও তাহাদের চালক কংগ্রেসের বর্ত্তমান কর্ত্তৃপক্ষেরও সংগ্রাম আরম্ভ করিবার কোন অভিপ্রায় নাই। এই অবস্থায় দক্ষিণপন্থীদের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়া ঐক্যের ঠাট বজায় রাখার অর্থ কংগ্রেসে প্রতিক্রিয়াশীলতা ও নিষ্ক্রিয়তাকেই চিরস্থায়ী করা। আমরা এইরূপ করিতে পারি না— আমাদের এইরূপ করা উচিত নয়।

 অতএব, বর্ত্তমানে বামপক্ষের প্রথম কর্ত্তব্য দক্ষিণপক্ষের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া সংহত ও সঘবদ্ধ হওয়া। এই কার্য্য সম্পন্ন হইলে, বামপন্থীদল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করিয়া কংগ্রেসের নামে স্বাধীনতা-সংগ্রাম শুরু করিতে পারিবে। ইহাই আজিকার দিনে বামপন্থীদের একমাত্র কর্ত্তব্য। এই ঐতিহাসিক প্রয়োজন সিদ্ধির জন্যই ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’-এর আবির্ভাব।

 বর্ত্তমান বামপন্থী দলগুলির উচিত ছিল—তাহাদের মধ্যে সংহতি স্থাপনের এই ব্রত গ্রহণ করা। কিন্তু যে কারণেই হউক তাহারা এই কর্ত্তব্যসাধনে অগ্রসর হয় নাই। গত বৎসর বামপন্থী কংগ্রেসকর্মিগণ বামপন্থী ব্লক গঠনের প্রস্তাব আলোচনা করেন—তখন মনে হইয়াছিল, বামপন্থী দলসমূহ এই প্রস্তাব গ্রহণ করিয়া কার্য্যে পরিণত করিবার চেষ্টা করিবে। কিন্তু পরে, তাহাদের মত পরিবর্ত্তন হয়। তাই বামপন্থী দলসমূহের অভ্যন্তরস্থিত নবীন কর্মীদের সহায়তায় ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন অপরিহার্য হইয়া পড়িল। কাজেই, ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’-এর আবির্ভাবের মূলে কেবলমাত্র কংগ্রেসের