পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৯৫

 (১৫) জাতীয় পুনর্গঠনক্ষেত্রে ফরওয়ার্ড ব্লক পরিকল্পনায়, বিশেষভাবে শিল্পোন্নতির পরিকল্পনায়, বিশ্বাসী। সময় ও সুযোগ উপস্থিত হইলে ফরওয়ার্ড ব্লক রাষ্ট্রের কর্ত্তৃত্বে শিল্পপ্রসার সাধনে সচেষ্ট হইবে। অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী প্রতিষ্ঠান সমূহের সহিত পরামর্শক্রমে ফরওয়ার্ড ব্লক ভূমি-ব্যবস্থা সম্পর্কেও প্রগতিশীল নীতি গ্রহণ করিবে।

 উপরি-উক্ত কর্মপন্থা কার্য্যকরী করিতে ফরওয়ার্ড ব্লক যথাসাধ্য চেষ্টা করিবে এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্ত্তৃক যাহাতে এই কর্মপন্থা গৃহীত হয়, তদুদ্দেশ্যে ইহার অনুকূলে প্রচার কার্য্য চালাইবে।

 গত ১৯৪১ সালে আগষ্ট মাসে কংগ্রেসের “ভারত ত্যাগ কর” প্রস্তাবের ভিত্তিতে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে যে ব্যাপক গণ-আন্দোলন আরম্ভ হইয়াছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মিগণ তাহাতে উল্লেখযোগ্য অংশ গ্রহণ করে এবং অশেষ নির্য্যাতন ও লাঞ্ছনা ভোগ করে। সংগ্রাম-বিমুখ দক্ষিণপন্থীদের সহিত বামপন্থী ফরওয়ার্ড ব্লকের মধ্যে যে মতভেদ ছিল আগষ্ট আন্দোলনের ফলে তাহা বিদূরিত হয়। ব্লকের অনেক কর্মী দীর্ঘকাল যাবৎ কারাদণ্ড ভোগ করিতেছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা আজিও প্রত্যাহৃত হয় নাই। আগষ্ট আন্দোলনের দ্বারাই প্রমাণিত হইল যে, মূল কংগ্রেসের সহিত বামপন্থীদলগুলির যে মতানৈক্য তাহা কেবল কর্মপন্থার—একান্তই বাহ্যিক। সংগ্রামাত্মক পরিকল্পনার ভিত্তিতে দক্ষিণপন্থী ও বামপন্থী দলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা অতিশয় সহজসাধ্য। ফরওয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল প্রভৃতি বামপন্থী প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে কংগ্রেসের মনোভাব এখন পর্য্যন্ত পরিষ্কাররূপে জানা যায় নাই। অথচ গত আগষ্ট আন্দোলনে এই সকল প্রতিষ্ঠানই অধিকতর কষ্টস্বীকার ও দুঃখবরণ করিয়াছে। ইহাদেরই প্রচেষ্টায় আগষ্ট আন্দোলন কিয়ৎ পরিমাণে সাফল্যমণ্ডিত হইয়াছে—নেতৃবৃন্দের গ্রেফ্‌তারের পর এই সকল