পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৯৭

সত্যাগ্রহ করিতে পারিবে না। দ্বিতীয় প্রস্তাবের দ্বারা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সহিত কংগ্রেসী মন্ত্রীদলের সম্বন্ধ নির্দ্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হয়। শেষোক্ত প্রস্তাবের দ্বারা কংগ্রেস মন্ত্রিত্বকে কংগ্রেস কমিটির ঊর্দ্ধে স্থান দেওয়া হয়। সুভাষচন্দ্র সে সময়ে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন। নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি কর্ত্তৃক ঐ দুইটি প্রস্তাব গ্রহণের ফলে সুভাষচন্ত্রের সহিত কংগ্রেসের নেতৃস্থানীয়দের পুনরায় বিরোধ উপস্থিত হয়। সুভাষচন্দ্রের মতে ঐ প্রস্তাব দুইটি কার্য্যে পরিণত হইলে কংগ্রেস নিয়মতান্ত্রিকতার দিকে বেশীরকম ঝুঁকিয়া পড়িবে এবং নিখিলভারত কংগ্রেস কমিটিতে সাধারণ কংগ্রেস কর্মীর অধিকার ক্ষুন্ন হইবে। ‘These resolutions were calculated to strengthen the position of the Rightists and to take the Congress away from the path of mass struggle.’ ৯ই জুলাই সুভাষচন্দ্র নিখিল-ভারত প্রতিবাদ দিবস পালনের নির্দ্দেশ দিলেন। কংগ্রেস কর্ত্তৃপক্ষ ইহাকে দিদ্রোহ বলিয়া গ্রহণ করিলেন এবং সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে আর এক দফা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করিলেন।

 অহিংস উপায়ে যাহারাই স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করিয়া আসিতেছে দল বা প্রতিষ্ঠান নির্ব্বিশেষে কংগ্রেস এ যাবৎ সে সমস্তেরই মিলনক্ষেত্র বলিয়া পরিগণিত হইত। কিন্তু ত্রিপুরীর পরে একদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের ফল এই হয় যে, কংগ্রেসের গণতান্ত্রিক ও সর্ব্বজনীন রূপ বিলুপ্ত হয়। একদলীয় মন্ত্রিসভার প্রতি অবিচলিত আস্থা ও দ্বিধাবিহীন আনুগত্যই কার্য্যতঃ এখন কংগ্রেসকর্মী হইবার পক্ষে একটি প্রধান সর্ত্ত হইয়া দাঁড়াইল। জাতীয় মহাসভা একটি Totalitarian প্রতিষ্ঠানে পরিণত হইল। একদলীয়ত্বের নীতি মন্ত্রিসভা হইতে দ্রুত সমস্ত কংগ্রেস সংগঠনের মধ্যে সংক্রামিত হইল। কংগ্রেস হাইকমাণ্ডের কর্ম্মপদ্ধতির প্রতি যাহাদের পরিপূর্ণ আস্থা নাই তাঁহাদিগকে অর্থাৎ সমস্ত বামপন্থীদের কংগ্রেস হইতে