পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২১৩

সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে তুমুল প্রচারকার্য চালাইতে থাকে। সমগ্র জাতীয় মহাসভার শক্তি ও প্রভাব তাঁহার বিরুদ্ধে নিয়োজিত হয়। জাতীয় কংগ্রেস হইতে তিনি ত অপসৃত হইয়াছেনই তাহা ছাড়া জাতীয় কংগ্রেসের সমস্ত শক্তি ও প্রভাব জনসাধারণের মধ্যে সুভাষচন্দ্রের প্রভাব খর্ব করিবার উদ্দেশ্যে উদ্যত ও প্রযুক্ত হইল। অনেক স্থানে কংগ্রেসের চারি আনা সদস্যদের ও সুভাষচন্দ্রের সভা ও বক্তৃতাদিতে উপস্থিত থাকিতে নিষেধ করা হয়। পণ্ডিত জওহরলাল নেহ্‌রু যুক্তপ্রদেশের কংগ্রেস কমিটিগুলির উপর হুকুমনামা জারী করেন, “to dissociate themselves from any tours or visits of leaders who undertake them independently of official Congress sanction.”

 পূর্বেই বলিয়াছি ইউরোপের যুদ্ধ সুরু হইতে না হইতেই কংগ্রেস সর্তাধীনে যুদ্ধ সমর্থন করিবার ইঙ্গিত দিতে থাকে; ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য ব্যাপারে কিছু সুবিধালাভের পরিবর্ত্তে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ ব্যবস্থায় সাহায্যদানের কথা উঠিতে থাকে। কংগ্রেস নেতৃবর্গ বোমাবিধ্বস্ত ইংলণ্ডবাসীর প্রতি সহানুভূতিতে গদ্‌গদ হইয়া উঠেন। মহাত্মা গান্ধী ত বিনাসর্ত্তে সাহায্য করিতেও প্রস্তুত। তিনি একবাক্যে ঘোষণা করিলেন—My sympathies are wholly with the allies. পণ্ডিত নেহেরুও ইউরোপীয়-মার্কা তথাকথিত ‘Progress ও Democracy’র ধুয়া তুলিয়া গান্ধীজীর পক্ষ সমর্থন করিলেন। কারণ, তাঁহার বিবেচনায় ভারতবর্ষের এমন কিছু করা উচিত নয় ‘which might alienate the progressive forces of the world.’ কংগ্রেসের ‘Policy of Non-embarrassment’ অব্যাহতভাবে চলিতে থাকে। বিগত মহাযুদ্ধে ভারতীয়দের সাহায্য দানের চরম পুরষ্কার জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের রক্তরঞ্জিত স্মৃতি মানসপট হইতে মুছিয়া না গেলেও মহাত্মা বৃটেনের এই দুর্দ্দিনের সুযোগ লইবেন না। “If the