পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২১৫

যে কি মহাসর্ব্বনাশ ডাকিয়া আনিতেছেন সুভাষচন্দ্র বারংবার সে সম্বন্ধে দেশবাসীকে সতর্ক করিয়া দিলেন। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে তিনি দেশবাসীকে আহ্বান করিলেন। বিপ্লবী নেতার সংগ্রামের আহ্বানে দেশ বিরাটভাবে সাড়া দেয়। দেশের জাগ্রত যুবশক্তি ও বিপ্লবিগণ—কিষাণ, মজুর ও ছাত্রদল আপোষহীন সংগ্রামের পতাকাতলে সমবেত হইতে থাকে। পেশোয়ার হইতে আসাম পর্যন্ত, দক্ষিণে কুমারিকা পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লকের সংগঠন ছড়াইয়া পড়ে। ইতিমধ্যে রামগড়ে কংগ্রেসের ৫৩তম অধিবেশন আসিয়া পড়িয়াছিল।

 এবার কংগ্রেসের সংগে সংগে রামগড়ে বামপন্থী নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে একটি আপোষ বিরোধী সম্মেলনের অনুষ্ঠান হয়। মহাত্মা প্রমুখ কংগ্রেসের বর্ত্তমান পরিচালকগণ জাতীয় মহাসভার পূর্ণ আদর্শ ক্ষুণ্ণ করিয়া ব্রিটিশ সরকারের সহিত আপোষ করিতে উদ্‌গ্রীব বলিয়া তাহার বিরুদ্ধে মনোভাব জ্ঞাপনের জন্যই এই স্বতন্ত্র সম্মেলনের ব্যবস্থা হইয়াছিল। সুভাষচন্দ্র সমগ্র দেশের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে একাকী দণ্ডায়মান হইয়া যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়াছেন তাহা ভারতের ইতিহাসে অদ্বিতীয়। সুভাষচন্দ্রের সমর্থক দলের সংখ্যা যে কংগ্রেসের বর্ত্তমান নেতৃবর্গের সমর্থকগণের তুলনায় কম নহে রামগড় কংগ্রেসে তাহা প্রমাণিত হয়। কংগ্রেসের প্রকাশ্য অধিবেশন অপেক্ষা আপোষ-বিরোধী সম্মেলনেই অধিক জনসমাবেশ হইয়াছিল। দলে দলে বিহার ও বাংলার কৃষক ও মজুরেরা রামগড় যাইয়া এই আপোষ-বিরোধী সম্মেলনে যোগদান করে। ত্রিবর্ণ-রঞ্জিত কংগ্রেস পতাকা ও রক্তপতাকা উড্ডীন করিয়া সম্মেলনের সভাপতি সুভাষচন্দ্র নিম্নোক্ত অভিভাষণ প্রদান করেন—

 ‘কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সমর্থকগণ যুক্তি দেখাইয়া থাকেন যে কংগ্রেসই সর্ব্বাপেক্ষা বৃহত্তম আপোষ বিরোধী প্রতিষ্ঠান। পাটনায় কংগ্রেসওয়ার্কিং কমিঠির সর্ব্বশেষ অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাব কংগ্রেসের