পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

আপােষ বিরােধী মনােভাবের নজির হিসাবে তুলিয়া ধরা হয়। কিন্তু পাটনা প্রস্তাব ও বিশেষ করিয়া উহার শেষাংশ পাঠ করিলেই বুঝিতে পারা যায় যে উহাতে এমন কতকগুলি ছিদ্র আছে যাহা ঐ প্রস্তাবের আসল উদ্দেশ্যই নষ্ট করিয়া দিয়াছে। উপরন্তু, পাটনা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার সংগে সংগেই গান্ধীজী এক বিবৃতি দিয়া জানাইয়াছেন যে, আপােষ মীমাংসার জন্য ভবিষ্যৎ আলােচনার পথ রুদ্ধ হয় নাই। যুদ্ধ বাঁধিবার পরই গান্ধীজী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সহিত পরামর্শ না করিয়াই সিমলায় বড়লাটের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান এবং যুদ্ধ পরিচালনায় তিনি বিনাসর্ত্তে গ্রেটবৃটেনকে সাহায্য প্রদানের আশ্বাস দেন। যুদ্ধ আরম্ভ হওয়া মাত্রই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি আমাদের পূর্ণ স্বরাজের দাবীকে পাশ কাটাইয়া চলিতে আরম্ভ করেন ও তৎপরিবর্ত্তে কৃত্রিম গণ পরিষদের জিগির তুলিয়াছেন। দক্ষিণপন্থী বড় বড় নেতারা এমনকি ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যগণও গণ পরিষদের যথার্থ তাৎপর্য ও গুরুত্ব বিস্মৃত হইয়া পৃথক নির্বাচন ও বর্ত্তমান আইনসভার সংকীর্ণ ভােটাধিকারের ভিত্তিতেই গণপরিষদ গঠনের স্বপ্ন দেখিতেছেন। কংগ্রেস মন্ত্রিমণ্ডলীর পদত্যাগের পরও কতিপয় কংগ্রেসী মন্ত্রী মন্ত্রীত্বের মসনদে পুনরােপবেশন করিতে অতিমাত্রায় ইচ্ছুক হইয়াছিলেন। সমস্ত দেশ আজ ওয়ার্কিং কমিটির নিকট হইতে সুস্পষ্ট ঘােষণা চাহিতেছে এই মর্মে যে সাম্রাজ্যেবাদের সহিত সকলরকম আপােষ আলােচনার পথ চিরতরে রুদ্ধ হইয়াছে। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটি এইরূপ ঘােষণা করিবেন কী? করিলে তাহা কবে করিবেন?

 বৃটিশ গভর্ণমেণ্টও কংগ্রেসের উপর কোন গুরুত্ব আরােপ করিতেছেন না। তাহারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছে যে কংগ্রেসীরা যতই আস্ফালন করুক কেন কার্য্যতঃ তাহারা সংগ্রামে অবতীর্ণ হইবে না। গত ছয়মাস যাবৎ আমরা কেবল কথার জাল বুনিয়াছি