পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৪
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

Testament” আখ্যা দিয়াছেন। সুভাষচন্দ্রের জীবনাদর্শের দিক হইতে এই পত্রখানির বিশেষ গুরুত্ব আছে। আমরা নিম্নে উহা হইতে কয়েকটি অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করিতেছি।—“বর্ত্তমান অবস্থায় আমার জীবন দুর্ব্বিষহ হইয়া উঠিয়াছে। অবিচার ও অন্যায়ের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়া বাঁচিয়া থাকিবার সুযােগ গ্রহণ করা আমার পক্ষে আত্মমর্য্যাদাহানিকর। এভাবে জীবনকে ক্রয় করিবার পরিবর্ত্তে আমি জীবন বিসর্জ্জন দিতে প্রস্তুত। গভর্ণমেণ্ট প্রকাশ্যভাবে তাহার সর্বশক্তি প্রয়ােগ করিয়া আমাকে আটক রাখিতে বদ্ধপরিকর। ইহার বিরুদ্ধে আমি বলিতে চাই যে, আমাকে মুক্তি না দিলে আমি বাঁচিতে চাহি না। এভাবে বাঁচিয়া থাকা অথবা জীবন বিসর্জ্জন দেওয়া সম্পূর্ণ আমার নিজের হাতে।”

 “যদিও আমার মৃত্যুতে এখনই কোন বাস্তব ফল হইবে না। তবুও কোন ত্যাগস্বীকারই বিফল হয় না। দুঃখ বরণ ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়াই যুগে যুগে, দেশে দেশে সমস্ত সংগ্রাম শক্তি ও প্রেরণা লাভ করে। সর্বদেশে সর্বকালে বীর শহিদের রক্তবিন্দু হইতেই ভবিষ্যৎ সংগ্রামের বীজ অঙ্কুরিত হয়।”

 “এই মরজগতে সমস্তই ধ্বংস প্রাপ্ত হয় কেবল আদর্শ, প্রেরণা ও বিশ্বাস বাঁচিয়া থাকে। একজনের আত্মত্যাগের আদর্শ সহস্রজনের মধ্যে নূতন প্রেরণা জাগাইয়া দেয়—সেই আদর্শ সহস্র জীবনে মূর্ত্ত হইয়া উঠে। এই নিয়মেই বিবর্ত্তনশীল জগতে যুগ হইতে যুগান্তরে একের আদর্শ ও সাধনা সঞ্জীবিত ও সংক্রামিত হইয়া থাকে। দুঃখবরণ ও আত্মদান ব্যতীত কোন আদর্শ, কোন সংগ্রামই জয়যুক্ত ও সার্থক হয় না।”

 “কোন আদর্শের বেদীমূলে জীবন বিসর্জ্জন অপেক্ষা মানবজীবনের আর কি কাম্য আছে? মানুষ যদি ত্যাগ ও কষ্টের দ্বারা পার্থিব জীবনে