পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১১

গ্রন্থরাজি অত্যন্ত মনোযোগের সহিত পড়িতেন—ধ্যানধারণাও অভ্যাস করিতেন এবং অবসর সময়ে ধর্ম্মপ্রাণা জননীর সহিত ধর্ম্মবিষয়ের আলোচনায় প্রবৃত্ত হইতেন, এই ভাবেই তাঁহার অধিকাংশ সময় কাটিত। কিন্তু এখন যেন তাঁহার মনের সমস্ত বাঁধ ভাঙ্গিয়া গেল। পরীক্ষার পড়ায় এখন আর মন বসে না। দরিদ্রনারায়নের সেবা, পীড়িতের শুশ্রূষা ও দীনদুঃখীর অভাব মোচন করিতেই সুভাষচন্দ্রের সময় কাটিতে লাগিল। তৎসত্ত্বেও ১৯১৩ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন—ইহা হইতেই বুঝিতে পারা যায় সুভাষচন্দ্র কিরূপ মেধাবী ছাত্র ছিলেন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় ইংরেজী রচনা তিনি এত ভাল লিখিয়াছিলেন যে পরীক্ষক নিজেও অত ভাল লিখিতে পারিতেন না বলিয়া মন্তব্য প্রকাশ করেন।

 এই বৎসরই সুভাষচন্দ্র সংস্কৃত, গণিত ও লজিক লইয়া কলিকাতায় প্রেসিডেন্সী কলেজে আই, এ ক্লাসে ভর্ত্তি হন। কলেজে পড়ার সময় সুভাষ ভবানীপুরে এলগিন রোডের বাড়ীতে থাকিতেন। ছেলেদের জন্য জানকীবাবুই এই বাড়ী প্রস্তুত করিয়া দেন। এই সময় কার্য্য হইতে অবসর গ্রহণ করিয়া তিনি সপরিবারে পুরীতে বাস করিতেন। কলেজ জীবন আরম্ভ করিবার পূর্ব্বেই সুভাষচন্দ্র ও তাঁহার একদলবন্ধু রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের উপদেশানুযায়ী নিজেদের জীবন গঠন করিবার সঙ্কল্প করেন। সুভাষচন্দ্র যখন প্রেসিডেন্সী কলেজে প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে পড়েন সেই সময় ডাঃ সুরেশচন্দ্র ব্যানার্জ্জী ৩নং মির্জ্জাপুর স্ট্রীটস্থ মেডিক্যাল মসে একটি দল গঠন করেন। ডাঃ ব্যানার্জ্জী তখন মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন। কৌমার্য্য ব্রত অবলম্বন করিয়া দেশের সেবা ও ধর্ম্মজীবন যাপন করাই এই দলের উদ্দেশ্য ছিল। বহু মেধাবী ছাত্র এই দলে যোগদান করিয়াছিলেন। এইখানেই ডাঃ প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ ও নৃপেন্দ্র নাথ বসুর সহিত সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠতা হয়। এই সময় ধর্ম্মভাবই সুভাষচন্দ্রের মনে