পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

দের মধ্যে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা। পশ্চাদপসরণের প্রথম সুযোগ পাইল শ্বেতাঙ্গগণ, এমন কি ফিরিঙ্গিদিগকেও ফেলিয়া আসা হইল। এশিয়াবাসী চিরতরে জানিয়া লইল এই সকল সাম্রাজ্যবাদীদের নিকট ন্যায়বিচার যাচ্‌ঞা করিয়া কোন ফল হইবে না। সুতরাং, জাপান যখন বর্মার দুয়ারে আঘাত হানিতেছে তখন এশিয়াবাসীর মনে স্বভাবতই প্রতীচ্য সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও ঘৃণা পুঞ্জীভূত হইল এবং স্বাধীনতালাভের আকাঙ্ক্ষাও অদম্য হইয়া উঠিল। সাম্রাজ্যবাদী নীতি ও পদ্ধতিতে অভ্যস্ত জাপান বিক্ষুব্ধ এশিয়াবাসীদের এই মানসিক অবস্থার কথা ভালভাবেই বুঝিতে পারিল ও এই পরিস্থিতিকে স্বীয় স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে নিজেদের অনুকূলে ব্যবহার করিতে চেষ্টা করিল। জাপান শ্বেতাঙ্গবিরোধী মনোভাবে ইন্ধন যোগাইল। ‘এশিয়া এশিয়াবাসীর’ ‘বৃহত্তর পূর্ব্ব-এশিয়ার উন্নতি’ প্রভৃতি মুখরোচক বুলি প্রচার করিয়া সাম্রাজ্যবাদে দীক্ষিত এশিয়ার এই নব্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিটি এশিয়াবাসীর চিত্তজয় করিতে প্রয়াসী হইল।

 কিন্তু, এই সকল দেশের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা সাম্রাজ্যবাদী জাপানকেও ভালরূপেই চিনিত। চীনে জাপানীদের অত্যাচার ও বর্ব্বরতার পরে জাপানকে বিশ্বাস করিবার কোন কারণ ছিল না এবং কার্য্যতঃ তাহারা কখনই জাপানকে বিশ্বাস করে নাই। জাপানও এই সকল দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস পূর্ব্বেই জানিত। তাই সে বুঝিয়াছিল যে, পূর্ব্ব-এশিয়ায় তাহার তাঁবেদার রাষ্ট্র গঠন করিবার সুবিধা হইবে না। তথাপি কি করিয়া বিভিন্নদেশে স্বাধীনতার আন্দোলন গড়িয়া উঠিল? জাপান তাহাদের সাহায্য করিল কেন? তাহারাই বা কেন জাপানের সাহায্য গ্রহণ করিতে রাজী হইল?

 জাপানের পক্ষ হইতে এই সকল স্বাধীনতা আন্দোলনে সাহায্য করিবার বিশেষ সামরিক কারণ ছিল। মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে বহুদিনব্যাপী