পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

ব্রহ্ম গভর্ণমেণ্ট গঠিত হয়। এই সকল গভর্ণমেণ্ট যে জাপ-বিরোধী ছিল তাহার প্রচুর প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। এমনকি সামরিক কর্ত্তৃপক্ষকেও তাহা স্বীকার করিতে হইয়াছে। স্বাধীন ব্রহ্মবাহিনী জাপানের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে এবং মান্দালয়, প্রোম, পেগু, রেঙ্গুন প্রভৃতি অঞ্চল তাহারাই দখল করে। ডাঃ সোয়েকার্ণোর গভর্ণমেণ্টও সক্রিয়ভাবে জাপানীদের বিরুদ্ধাচরণ করে। এইভাবে জাপ-অধিকারের সময়ে স্বাধীন জাতীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করিয়া এই সকল দেশের মুক্তিসংগ্রামের নায়কগণ যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়াছে সে কথা এখন বিদেশীরাও স্বীকার করিতেছে। জাভা সম্পর্কে জনৈক মার্কিণ সংবাদপত্র প্রতিনিধি বলিয়াছেন যে, গত দুই শতাব্দীতে জাভা যতটা উন্নতি না করিয়াছে মাত্র তিন বৎসরেই তাহার অনেক গুণ অধিক উন্নতি করিয়াছে। তাহা ছাড়া, যুদ্ধ সমাপ্তির পরে ব্রহ্ম, মালয়, জাভা এবং ভারতবর্ষে যে সকল ঘটনা ঘটিতেছে তাহা হইতে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়, এই সকল গভর্ণমেণ্টের গঠন ও প্রতিষ্ঠালাভ সমগ্র এশিয়ার পরাধীন জাতিগুলির স্বাধীনতালাভের আন্দোলনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করিয়া তুলিয়াছে। ব্রিটিশ ও ওলন্দাজ সাম্রাজ্যবাদের সম্মিলিত অভিযান ব্যর্থ করিয়া ইন্দোনেশীয়গণ তাহাদের রক্তের স্বাক্ষরে যে গৌরবময় ইতিহাস রচনা করিয়া বিশ্বের স্বাধীনতাকামী জনগণের শ্রদ্ধা অর্জন করিয়াছে ও তাহাদের আদর্শ-স্থানীয় হইয়াছে তাহা বহুলাংশে এই সকল আন্দোলনেরই ফল। নেতাজী সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে অস্থায়ী আজাদ-হিন্দ্ গভর্ণমেণ্ট ও ফৌজের গঠন ইতিহাসকেও এই পটভূমিকায় দেখিতে হইবে।

 ১৯৪২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ইংরাজদের দুর্ভেদ্য দুর্গ সিঙ্গাপুর জাপানীদের বিদ্যুৎ আক্রমণে ব্রিটিশের হস্তচ্যুত হয়। ঐ সময়ে পনর সহস্র ব্রিটিশ সৈন্য, তের সহস্র অষ্ট্রেলিয়ান সৈন্য ও বত্রিশ সহস্র ভারতীয় সৈন্য জাপানীদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। ভারতীয় সৈন্যদের জাপানীদের