পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

মাইক্রোফোন তাহাদের দেওয়া হয় নাই, এমন কি যুদ্ধক্ষেত্রে ঔষধ ও খাদ্য সম্পর্কেও জাপানীরা আজাদী সৈনিকদের প্রতি নিদারুণ দুর্ব্যবহার করে। কোন প্রকার সাহায্য করিতেই তাহারা প্রস্তুত ছিলনা। একথা নিশ্চয়ই গর্বের বিষয় যে আজাদহিন্দ্ ফৌজ শত দুঃখ কষ্ট সহ্য করিয়াও স্বাধীনতা বজায় রাখিয়াছিল, সামান্য সুবিধার জন্য জাপানীদের দাসত্ব স্বীকার করে নাই।

 “কবে ভারত বুঝিবে যে নেতাজী নিঃশব্দে স্বদেশের জন্য কী মহৎ কাজ করিয়াছেন—কি ভাবে তিনি কলিকাতা, জামসেদপুর, মাদ্রাজ ও অন্যান্য জনবহুল সহরগুলিকে জাপানী আক্রমণ হইতে রক্ষা করিয়াছেন। শ্রী রা—আমাকে বলিয়াছে যে আজাদ হিন্দ্ সরকার জাপানীদের হাত বাঁধিয়া রাখিয়াছে। জাপানকে জানাইয়া দিয়াছে যে, আমরা ভারতবর্ষ ধ্বংসসাধনের সহায়ক হইতে পারি না। ভারত সুপক্ক আপেল ফলের ন্যায় আমাদের হাতে আসিয়া পড়িবে।” (বিদ্রোহী তনয়ার ডায়েরী)

 পূর্ব এশিয়ার আজাদ হিন্দ অন্দোলনের সহিত কংগ্রেসের আন্দোলনের আদর্শগত কোন পার্থক্য ছিলনা। পূর্ব এশিয়ার ভারতবাসী চিরকাল ভারতের জাতীয় আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক কংগ্রেসকে আপনার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান বলিয়া স্বীকার করিত। যখন স্বাধীনতা লীগের প্রতিষ্ঠা হয় তখনও ইহা কংগ্রেসের আদর্শে অনুপ্রাণিত কংগ্রেস আন্দোলনেরই একটি শাখা হিসাবে গঠিত হয়। ব্যাঙ্কক সম্মেলনে অজাদ হিন্দ লীগের মূলনীতি নির্দ্ধারিত হয়— এই সংঘ কংগ্রেসের আদর্শে গঠিত হইবে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শ অনুসরণ করিয়া আজাদ হিন্দ সংঘের আদর্শ, কর্ম্মপদ্ধতি ও ভারতের মুক্তিসংগ্রামের সকল পরিকল্পনা গঠিত হইবে। আজাদ হিন্দ সংঘ ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব স্বীকার করিয়া চলিবে এবং কংগ্রেস আন্দোনকে পরিপুষ্ট করিয়া তুলিতে সহায়তা করিবে। সুভাষচন্দ্র যখন ড্রেসডেনে