পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

তিনি উপর্যুপরি দুইবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইয়াছেন। সুতরাং কংগ্রেসের আদর্শ হইতে বিচ্যুত হইবার কোন সম্ভাবনাই তাঁহার ছিল না। সুভাষচন্দ্র জানিতেন যে ভারতবর্ষের সববৃহৎ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান কংগ্রেস। ভারতবাসী তাহাকে সম্মান করে, শ্রদ্ধাকরে এবং তাহারই ভিতর তাহাদের জাতীয় জীবনের আশা আকাঙ্ক্ষার আদর্শ ও সমস্যার সমাধান দেখিতে পায়। ভারতবর্ষ হইতে বৃটিশ শাসন অপসারিত করিবার বৃহত্তম অস্ত্র কংগ্রেস—ভারতবর্ষে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গঠনের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান কংগ্রেস। সুতরাং কংগ্রেসকে বাদ দিয়া বা তাহার আদর্শকে পরিত্যাগ করিয়া কোন আন্দোলন হইলে সে আন্দোলন ভারতবাসীর সমর্থন লাভ করিবেনা। পূর্ব এশিয়ায় গঠিত ফৌজ এবং গভর্ণমেণ্টকে যদি চিরতরে ভারতবর্ষে কায়েম করিবার চেষ্টা করা হয় তাহা হইলে ভারতের জনগণ তাহা গ্রহণ করিবে না। সেই জন্যই সুভাষচন্দ্র গঠন করিলেন অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট যে গভর্ণমেণ্ট পরে ভারতবর্ষে ভারতবাসীর ইচ্ছানুযায়ী গঠিত স্থায়ী গভর্ণমেণ্টে পরিণত হইবে।

 ১৯৪৩ সালের ২৩ শে অক্টোবর সুভাষচন্দ্র আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের ঘোষণায় বলেন,—“অস্থায়ী গভর্ণমেণ্টের প্রধান কর্ত্তব্য হইল ব্রিটিশ ও তাহার মিত্রদের ভারতভূমি হইতে বিতাড়িত করিবার জন্য সংগ্রাম পরিচালনা করা। ইহার পর অস্থায়ী গভর্ণমেণ্টের কর্ত্তব্য জনগণের ইচ্ছানুসারে এবং তাহাদের বিশ্বাসভাজন স্থায়ী জাতীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করা। ব্রিটিশ এবং তাহার মিত্রবর্গ বিতাড়িত হইবার পর যতদিন পর্য্যন্ত স্থায়ী জাতীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠিত না হইবে ততদিন অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট জনগণের পরিপূর্ণ আস্থাভাজন হইয়া সাময়িক ভাবে দেশের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করিবে।”

 “অস্থায়ী গভর্নমেণ্ট প্রত্যেক ভারতীয়ের আনুগত্য ও বিশ্বাস লাভ করিবার যোগ্য। এই গভর্নমেণ্ট ধর্ম্মগত স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিতেছে,