পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৭১

এবং সমস্ত অধিবাসীর সমান অধিকার ও সমান সুযোগ-সুবিধার দাবী স্বীকার করে। এই গভর্ণমেণ্ট ঘোষণা করিতেছে, বিদেশী-সরকার-সৃষ্ট দুরভিসন্ধিপ্রসূত সর্বপ্রকার বিভেদ ও বৈষম্য অতিক্রম করিয়া ইহা দেশের সকল সন্তানদের সমানভাবে পোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করিবে এবং ইহা দেশের সকল সম্প্রদায়ের সুখ-সমৃদ্ধি বিধানের পথে সর্বতোভাবে অগ্রসর হইতে কৃতসংকল্প।”

 ১৯৪৪ সালের ৫ই জুলাই নেতাজী সপ্তাহের দ্বিতীয় দিবসে সুভাষচন্দ্র ফৌজের উদ্দেশ্যে বলেন—“অস্থায়ী আজাদহিন্দ গভর্ণমেণ্টের সামরিক মুখপত্র হইল এই আজাদ হিন্দ ফৌজ। অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট ও তাহার সেনাদল ভারতমাতার সেবক। তাহাদের কর্ত্তব্য যুদ্ধ করিয়া ভারতবাসীকে মুক্ত করা। স্বাধীনতা অর্জিত হইলে ভারতবর্ষে কোন্ ধরণের গভর্ণমেণ্ট স্থাপিত হইবে ভারতের জনসাধারণই তাহা স্থির করিবে। স্বাধীনভারতে এই অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট সেদিন ভারতবাসীর ইচ্ছানুযায়ী গঠিত স্থায়ী গভর্ণমেণ্টের জন্য আসন ছাড়িয়া দিবে। আমরা সেই গৌরবময় দিনের প্রতীক্ষা করিয়া আছি। আজ তাহার জন্যই আমরা সংগ্রাম করিতেছি।”

 ৬ই জুলাই সুভাষচন্দ্র মহাত্মাগান্ধীর উদ্দেশ্যে প্রচারিত এক বেতার বক্তৃতায় বলেন—“এই অস্থায়ী গভর্ণমেণ্টের লক্ষ্য সশস্ত্র সংগ্রামের দ্বারা ভারতবর্ষকে বৃটিশের কবল হইতে মুক্ত করা। ভারতবর্ষ হইতে আমাদের শত্রুগণ বিতাড়িত হইলে এবং শান্তি শৃঙ্খলা স্থাপিত হইলে অস্থায়ী গভর্ণমেণ্টের কাজ নিঃশেষিত হইবে। আমাদের চেষ্টা, আমাদের উদ্যম, আমাদের ত্যাগ ও দুঃখ স্বীকারের জন্য আমরা একটি মাত্র পুরস্কার পাইতে ইচ্ছা করি, তাহা হইতেছে আমাদের মাতৃভূমির শৃঙ্খলমোচন। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাহারা একবার ভারত স্বাধীন হইলে রাজনীতিক্ষেত্র হইতে অবসর গ্রহণ করিবেন। যদি কোনক্রমে আমাদের স্বদেশবাসিগণ ভারতবর্ষে থাকিয়াই