পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৮৩

সংগ্রাম করিয়াছেন তথাপি সুভাষচন্দ্র স্বকীয় আদর্শ ও বিশ্বাসকে বিসর্জ্জন দেন নাই।শিবাদলমাঝে শার্দ্দুলের যে অবস্থা হয় স্বদেশে সুভাষচন্দ্রের অবস্থা কোথাও কোথাও অনুরূপই হইয়াছিল। উপযুক্ত ক্ষেত্রে সুভাষচন্দ্র স্বকীয় মহিমায় প্রোজ্জ্বল হইয়া প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন। পরাধীন ভারতে পিঞ্জরাবদ্ধ যে ব্যাঘ্রের অমিতবিক্রম সুপ্ত অবস্থায় ছিল ভারতের বাহিরে তাহাই সহস্রধারায় অপূর্ব ভাস্বরদ্যুতি বিকিরণ করিয়া দিঙ্মণ্ডল আলোকরশ্মিচ্ছটায় উদ্ভাসিত করিয়া তুলিয়াছে। ভস্মাচ্ছাদিত বহ্নি অনুকূল আবহাওয়ায় প্রদীপ্ত হইয়াছে। সুভাষচন্দ্রের যে ব্যক্তিত্ব, যে তেজোদৃপ্তরূপ আজ মধ্যাহ্নমার্ত্তণ্ডের মত কিরণ জাল বিস্তার করিয়া অবিশ্বাসী, পরশ্রীকাতর ও দীনাত্মা ব্যঙবিলাসীদের চোখ ঝলসাইয়া দিয়াছে ভারতবর্ষে তাঁহার সহকর্মীরাও পূর্বে তাহার সেই পরিচয় পান নাই। মহাত্মাজী বলিয়াছেন—“But a full knoweldge of his resourcefulness, soldiership and organizing abilities came to me only after his escape from India.” কবির ভাষায় বলিতে পারি—

“অখ্যাত অজ্ঞাত রহি দীর্ঘকাল হে রাজবৈরাগী,
গিরিদরীতলে
বর্ষার নির্ঝর যথা শৈল বিদারিয়া উঠে জাগি
পরিপূর্ণ বলে
সেই মতো বাহিরিলে,—বিশ্বলোক ভাবিল বিস্ময়ে
যাহার পতাকা
অম্বর আচ্ছন্ন করে, এত কাল এতক্ষুদ্র হ’য়ে
কোথা ছিল ঢাকা।”

 পূর্ব এশিয়ায় সংগ্রামরত ভারতসন্তানদের মধ্যে দেশপ্রেমের বিস্ময়কর উন্মাদনা ও কর্মতৎপরতা যাহারা প্রত্যক্ষ করিয়াছে—নেতাজীর পঞ্চাশতম জন্মদিবসে কলিকাতার বুকে জনসমুদ্রের উত্তাল জলধি তরঙ্গ