পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

দেশসেবার কার্য্যে নিযুক্ত উচ্চতম স্তরের লোকদিগের মধ্যেও সঙ্কীর্ণতা এবং প্রতিহিংসাপ্রবৃত্তি এত প্রবল তখন আমাদের রাজনৈতিক জীবনের পরিণাম কি? আমার চিন্তা স্বভাবতঃই আমার প্রথম জীবনের আকাঙ্ক্ষিত সন্ন্যাসের প্রতি আকৃষ্ট হইত। সময়ে সময়ে এই আকর্যণ অতি প্রবল হইত।”

চার

 এদিকে নানা অনিয়ম ও অত্যাচারের ফলে তাঁহার স্বাস্থ্য ভাঙ্গিয়া পড়ে। গৃহে ফিরিবার কিছুদিন পরেই তিনি টাইফয়েড্ জ্বরে আক্রান্ত হন ও দীর্ঘকাল শয্যাশায়ী থাকেন। পূজার সময় বায়ুপরিবর্ত্তনের জন্য কার্শিয়াং গমন করেন। তথায় তাঁহার স্বাস্থ্যের কিছু উন্নতি হয়। সেই বৎসরই ১৯১৫ খ্রীষ্টাব্দে মাত্র অল্পকয়েকদিন পড়িয়াই তিনি আই, এ, পরীক্ষা দেন ও বিশেষ সম্মানের সহিত উত্তীর্ণ হন—প্রথমবিভাগের উপরদিকেই তাঁহার নাম ছিল। সুভাষচন্দ্রের ছাত্র জীবনেই তাঁহার ভবিষ্যৎ জীবনের মহত্ত্বের অঙ্কুর দেখা গিয়াছিল। তাঁহার জীবনের যে বৃহত্তর লক্ষ্য আছে তাহা তিনি তখন হইতেই উপলব্ধি করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। এই উপলব্ধি ও সচেতনতাই সুভাষচন্দ্রকে তাঁহার লক্ষ্যপথে জীবনের মহত্তম পরিণতির দিকে পরিচালিত করিয়াছে—সাংসারিক প্রতিপত্তির কোন প্রলোভনই তাঁহাকে পথভ্রষ্ট করিতে পারে নাই। এই সময়ে তিনি একখানি পত্রে লিখিয়াছিলেন—“আমি এটা বেশ বুঝিতেছি যে আমার জীবনের একটা definite mission আছে—তারই জন্য শরীর ধারণ—and I am not to drift in the current of popular opinion—লোকে ভাল মন্দ বলিরে জগতের এটা রীতি but my sublime self-consciousness consists in this that I am not affected by them.