পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩০৫

চরিত্রের মধ্যেই; বাধ্য হয়ে যদি সেই উপকরণকে রুদ্ধ ভাণ্ডারের তালা ভেঙ্গে সে উদ্ধার করতে পারে তবেই সে বাঁচবে, হিংস্র দুঃসময়ের পিঠের উপরে চড়েই বিভীষিকার পথ উত্তীর্ণ হতে হবে, এই দুঃসাহসিক অভিযানে উৎসাহ দিতে পারবে তুমি, এই আশা করে তোমাকে আমাদের যাত্রনেতার পদে আহ্বান করি।

 দুঃসাধ্য অধ্যবসায়ে দুর্গম লক্ষ্যে গিয়া পৌঁছবই যদি আমরা মিলতে পারি। আমাদের সকলের চেয়ে দুরুহ সমস্যা এইখানেই। কিন্তু কেন বলব ‘যদি’, কেন প্রকাশ করব সংশয়? মিলতেই হবে কেন না দেশকে বাঁচতেই হবে। বাঙ্গালী অদৃষ্ট কর্ত্তৃক অপমানিত হয়ে মরবে না এই আশাকে সমস্ত দেশে তুমি জাগিয়ে তোল, সাংঘাতিক মার খেয়েও বাঙ্গালী মারের উপর মাথা তুলবে। তোমার মধ্যে অক্লান্ত তারুণ্য, আসন্ন সঙ্কটের প্রতি মুখে আশাকে অবিচলিত রাখার দুর্নিবার শক্তি আছে তোমার প্রকৃতিতে। সেই দ্বিধাদ্বন্দ্বমুক্ত মৃত্যুঞ্জয় আশার পতাকা বাঙ্গালার জীবনক্ষেত্রে তুমি বহন করে আনবে সেই কামনায় আজ তোমাকে অভ্যর্থনা করি দেশনায়কের পদে। অসন্দিগ্ধ দৃঢ়কণ্ঠে বাঙ্গালী আজ একবাক্যে বলুক, তোমার প্রতিষ্ঠার জন্য তার আসন প্রস্তুত। বাঙ্গালীর পরস্পর বিরোধের সমাধান হোক তোমার মধ্যে, আত্মসংশয়ের নিরসন হোক তোমার মধ্যে, হীনতা লজ্জিত ও দীনতা ধিক্কৃত হোক তোমার আদর্শে; জয়ে পরাজয়ে আপন আত্মসম্ভ্রম অক্ষুন্ন রাখার দ্বারা তোমার মর্য্যাদা সে রক্ষা করুক।

 বাঙ্গালী নৈয়ায়িক, বাঙ্গালী অতি সূক্ষ্ম যুক্তিতে বিতর্ক করে, কর্ম্ম উদ্যোগের আরম্ভ থেকে শেষ পর্য্যন্ত বিপরীত পক্ষ নিয়ে বন্ধ্যা বুদ্ধির গর্বে প্রতিবাদ করতে তার অদ্ভুত আনন্দ, সমগ্র সৃষ্টির চেয়ে রন্ধ্র সন্ধানের ভাঙন্ লাগানো দৃষ্টিতে তার ঔৎসুক্য, ভুলে যায় এই তার্কিকতা নিষ্কর্মা বুদ্ধির নিষ্ফল শৌখিনতামাত্র। আজ প্রয়োজন হয়েছে তর্কের নয়,