পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩১৫

তিনি অনতিবিলম্বে জাপান যাইবেন এবং প্রধান প্রধান বিষয়ে জাপানীদের স্পষ্ট নীতি কি তাহা টোকিও গবর্ণমেণ্টের নিকট হইতে বাহির করিবেন। ইতিমধ্যে সঙ্ঘের কার্য চলিতে থাকিবে। এই সময় মালয়-শাখা প্রস্তাব করেন যে, রাসবিহারী বসুকে এতদ্বারা অনুরোধ করা যাইতেছে যে, তিনি প্রধান প্রধান বিষয়ে টোকিও গবর্ণমেণ্টের মতামত ও নীতি কি তাহা জানিতে সম্ভাব্য চেষ্টা করুন এবং টোকিও গবর্ণমেণ্টও ঘোেষণা, বিবৃতি বা অন্য যে কোন প্রকার উপায়ে তাহা যত শীঘ্র সম্ভব জ্ঞাত করুক। ইতিমধ্যে সঙ্ঘের কাজ পূর্বের মতই চলিতে থাকিবে, কিন্তু টোকিও গবর্ণমেণ্টের ঘোষণা বা বিবৃতির পরই কেবলমাত্র নূতনভাবে অগ্রসর হওয়া যাইবে।

 এই যখন অবস্থা তখন ইয়াকুরো কিকান আজাদ হিন্দ সঙ্ঘকে হীনবল করিবার জন্য একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল গঠন করিল। উহার অফিসারগণ আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের বিরুদ্ধে একটি গুপ্ত যুব আন্দোলন সংগঠন করিতে লাগিলেন এবং নিজেরাও তাঁবেদার অনুচর লইয়া আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচারকার্য এবং মিথ্যা রটনা সুরু করিলেন। ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মালয় শাখা কমিটি তিনদিন মিটিং ও আলোচনার পর শ্রীরাসরিহারীর নিকট একটি স্মারকলিপি পাঠাইতে মনস্থ করেন। এই স্মারকলিপি যথাস্থানে পৌঁছিবার পূর্বেই জাপানীরা গোপনে তাহা হস্তগত করিয়াছিল। তাহারা মালয় শাখার সভাপতি শ্রী এন্ রাঘবনকে পদত্যাগ করিতে বাধ্য করার জন্য শ্রীযুক্ত রাসবিহারী বসুর উপর চাপ দিতে লাগিল। ফলে শ্রীরাঘবন পদত্যাগ করেন। উক্ত শাখার অন্যান্য সভ্যগণ বুঝিলেন যে, পদত্যাগই জাপানীদের কাম্য, কেননা, তাহা হইলে জাপানের তাঁবেদারগণকে লইয়া সঙ্ঘ পুনর্গঠিত করা যাইবে ও আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ সম্পূর্ণভাবে জাপানীদের ‘পুত্তলিকা’ হইবে। এই সকল বিবেচনা কবিয়া, শ্রীরাঘবনের পরে আর কোন সভ্যই পদত্যাগ করিলেন না।