পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 ১৯৪৩ সালের এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুরে আর একটি প্রতিনিধ সম্মেলন হয়। ইহাতে পূর্ব এশিয়ার সমস্ত দেশের ভারতীয় প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় রাসবিহারী বসু জানান যে, শ্রীসুভাষচন্দ্র বসু আসিতেছেন এবং আন্দোলনের গুরুদায়িত্বভার তাঁহার ন্যায় একজন যােগ্যতম জন-নেতার উপর অর্পিত হইলে তিনি পদত্যাগ করিবেন।

 ১৯৪৩ সালের ২রা জুলাই শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসু সিঙ্গাপুরে পৌঁছেন এবং ৪ঠা জুলাই আহূত এক প্রতিনিধি সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সকল আন্দোলনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাসবিহারী পদত্যাগ করেন। বাঙ্গলা তথা ভারতের জনপ্রিয় একজন কংগ্রেসনেতাকে লাভ করিয়া তাজাদ হিন্দ সঙ্ঘ এবং তদীয় বাহিনী নবপ্রাণসঞ্চারে চঞ্চল হইয়া উঠিল। ৫ই জুলাই সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজের কার্যবিবরণী গৃহীত হয় এবং ঐ তারিখে উক্ত বাহিনীর গঠন সংবাদ প্রকাশ্যভাবে জগতে ঘােষণা করা হয়। সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্ব গ্রহণের পর হইতে ঘটনাবলী দ্রুত অগ্রসর হইতে থাকে। নারিগণও দলে দলে আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের সভ্যা হইতে থাকেন। তাহাদের মধ্য হইতে স্বেচ্ছাসেবিকা বাছাই করিয়া শ্রীমতী লক্ষ্মীর নেতৃত্বে “রাণী অফ্ ঝান্সী রেজিমেণ্ট” গঠিত হইল। অনেক মহিলা রেড ক্রসের সভ্য হইলেন। ১৯৪৩ সালের অক্টোবরে সিঙ্গাপুরে এবং পরে রেঙ্গুনেও নারীদিগকে সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত করিবার জন্য দুইটি সামরিক শিক্ষা বিদ্যালয় স্থাপিত হইল।

 ১৯৪২ সালে আজাদ হিন্দ্ ফৌজে স্বেচ্ছাসৈন্য সংগ্রহ করিবার জন্য আহ্বান জানান হইয়াছিল। অগণিত লােক সৈন্যদলে নাম লিখাইয়াছিল; কিন্তু জাপানীদের অস্পষ্ট নীতির ফলে সৈন্যদের শিক্ষাদান কার্যে বেশী দূর অগ্রসর হওয়া যায় নাই। এইবার শ্রীসুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে অবস্থা পরিবর্তিত হইল। তিনি স্পষ্ট ভাষায় এই মতামত ব্যক্ত করিলেন যে,