পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২১
পরিশিষ্ট

পরিস্থিতি খুব আশাপ্রদ ছিল না। শ্রীসুভাষচন্দ্রের সর্বাপেক্ষা কৃতিত্ব এই যে, তাঁহারই অনমনীয় নীতির ফলে জাপানীরা ভারত আক্রমণের নীতি পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হয়। ইহা ছাড়া অর্থনীতিক সাহায্যের দিক দিয়া বিচার করিলে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ভারত অভিযানের ন্যায় এক বৃহৎ দূরূহ অভিযানের ক্ষমতা তাহাদের ছিল না। এদিকে বার্ম্মা পুনর্দখলের যুদ্ধ শুরু করিবার জন্য বৃটিশ শক্তি বদ্ধপরিকর হইয়াছে। হকোয়াং উপত্যকায় ব্রিটীশের আক্রমণ এবং তাহাদের চিন্দুইন নদী অতিক্রমের সম্ভাবনায় জাপানীরা অধীর হইয়া পড়িল। তাহারা তাড়াহুড়া করিয়া একটা পরিকল্পনা করিয়া ফেলিল। ইম্ফল দখল করিবার জন্য অবিলম্বে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন; কিন্তু আজাদ হিন্দ ফৌজ জাপানী বাহিনীর ভারত আক্রমণের অধিকার কিছুতেই স্বীকার করিবে না। সুতরাং সুস্পষ্টভাবে জাপানীদের নীতি ঘোষণা করিতে হইল যে, উহারা কেবলমাত্র ইম্ফল দখল করিতে চায়; অতঃপর ভারত আক্রমণের সমস্ত সামরিক কার্যকলাপ আজাদ হিন্দ ফৌজের উপর ছাড়িয়া দেওয়া হইবে। আজাদ হিন্দ ফৌজ পরিস্থিতি সম্যক বুঝিতে পারিলেন। তথাপি ইম্ফল দখলের যুদ্ধে তাঁহারাই প্রধান অংশ গ্রহণ করিতে মনস্থ করিলেন। ১৯৪৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারী আজাদ হিন্দ ফৌজ আক্রমণাত্মক কার্য শুরু করে। ১৮ই মার্চ্চ শা’নওয়াজের অধীনস্থ বাহিণী পালেল খণ্ডের মধ্য দিয় ভারতব্রহ্ম সীমান্ত অতিক্রম করিয়া ভারতভূমিতে পদার্পণ করে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। এইরূপে ভারতবর্ষের একটি অংশ শত্রুকবলমুক্ত হয়। মেজর জেনারেল চ্যাটার্জ্জী এই অঞ্চলের প্রথম শাসনকর্ত্তা নিযুক্ত হন।

 এই বাহিনীতে প্রধানতঃ তিনটি ব্রিগেড, ছিল,—(১) শা’নওয়াজের নেতৃত্বে ৩২০০ সৈন্য লইয়া গঠিত ‘সুভাষ ব্রিগেড’।

 (২) কিয়ানির নেতৃত্বে ‘গান্ধী ব্রিগেড’। ইহার সৈন্যসংখ্যা ছিল ২৮০০।