পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 (৩) মােহন সিংহের নেতৃত্বে ‘আজাদ ব্রিগেড’। ইহাতে দুই নং ব্রিগেডের সমান সংখ্যক সৈন্য ছিল।

 ইহা ছাড়া তিনশত বাহাদুর দলের ফৌজ ছিল। সাতশত বেসামরিক সাহায্যকারীও ইহাদের সঙ্গে ছিলেন। কর্ণেল গুরু বক্স সিং ধীলনের নেতৃত্বে তিন হাজার সৈন্য লইয়া গঠিত নেহরু ব্রিগেড ইহাদের পিছনে ছিল। রাণী ঝান্সি ব্রিগেড ও বালসেনাদলও বিশেষ উল্লেখযােগ্য অংশ গ্রহণ করে। বালসেনাদল আত্মঘাতী বাহিণীর কাজ করিত। ইহারা পৃষ্ঠে মাইন বাঁধিয়া শত্রুর ট্যাঙ্কের নীচে পড়িয়া থাকিত ও সুযােগমত ট্যাঙ্ক উড়াইয়া দিত এবং নিজেরা মৃত্যুবরণ করিত। তাহারা মােরাই, কোহিমা ও অন্যান্য অনেক জনপদ দখল করিয়া ইম্ফলে উপনীত হয় এবং উহা অবরােধ করে। ২৭শে মার্চ্চ হইতে ৮ই মে পর্য্যন্ত ইম্ফল-কোহিমা-টিডি্ডম এলাকায় ও মণিপুর রােডের উপর সর্ব্বাপেক্ষা ভীষণতম যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে আজাদী সৈন্যেরা অতুলনীয় বীরত্ব প্রদর্শন করে। এই যুদ্ধে কোনরূপ বিমান সাহায্য দেওয়া সম্ভব হয় নাই এবং নিদারুণ বর্ষায় সরবরাহ পথ ছিন্ন হইয়া গিয়াছিল, তখন এই বাহিনী পশ্চাদপসরণে বাধ্য হয়। অতঃপর আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধে লিপ্ত থাকে। যখন বৃটিশ শক্তি বার্ম্মা আক্রমণ করিল, তখন এই বাহিনীর অনেক ‘ষ্টাফ অফিসার’ বৃটিশ পক্ষে যােগ দেন, কিন্তু অধিকাংশই আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখিয়া অবিচলিত ছিলেন। বৃটিশের হস্তে ‘মিক্তিলার’ পতন হইলে যখন পরিষ্কার বােঝা গেল জাপানীরা বৃটিশ অগ্রসরকে ঠেকাইতে পারিবে না, তখন রেঙ্গুন পরিত্যাগের পরিকল্পনা করা হইল।

 ১৯৪৫ সালের ২৩শে এপ্রিল জাপানী প্রধান সেনাপতি এবং বার্ম্মা গবর্ণমেণ্ট রেঙ্গুন ত্যাগ করিল। তাহাদের সহিত একত্রে রেঙ্গুন ত্যাগ করিতে শ্রীসুভাষচন্দ্রের অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট অস্বীকার করিয়াছিলেন। তাঁহারা ২৪শে এপ্রিল উক্ত সহর ত্যাগ করিয়া আসেন। কিন্তু ভারতীয়-