পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

সম্মুখীন হইতে না হয়, তজ্জন্য যুবরাজের কলিকাতা সফরের একমাস পূর্ব্বেই কংগ্রেস ও খিলাফৎ আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীগুলিকে বেআইনী ঘোষণা করা হয়। যুবরাজের কলিকাতা আসিবার কথা ছিল ২৫শে ডিসেম্বর। ১৯শে নভেম্বর তারিখে কলিকাতার পুলিশ কমিশনার কলিকাতা ও শহরতলিতে জনসভা ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করিবার এক আদেশ জারী করেন। কংগ্রেস ও খিলাফৎ প্রতিষ্ঠান সমূহকে বে-আইনী ঘোষণা করিয়া যে আদেশ জারী করা হয় তাহার প্রতিবাদকল্পে কলিকাতার জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দ ও কর্মিগণ এক বিবৃতি প্রচার করিয়া প্রাদেশিক ও জেলা কংগ্রেস কমিটির সভ্যগণকে স্বেচ্ছাসেবকবাহিনীতে যোগদান করিতে নির্দ্দেশ দেন।

 সরকারের দমননীতি নিরঙ্কুশভাবে চলিতে লাগিল। বাঙ্‌লায় কংগ্রেস ভলাণ্টিয়ার কোর বে-আইনী ঘোষিত; সরকারের উদ্দেশ্য ভলাণ্টিয়ার কোরের উচ্ছেদসাধন করিয়া কংগ্রেসকে ক্ষীণবল করা। দেশবন্ধু হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ করিয়া জেলখানাগুলি ভর্ত্তি করিয়া ফেলিবার আয়োজন করিলেন। দিনের পর দিন অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক কারাবরণ করিতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে কলিকাতা ও মফঃস্বলের সমস্ত জেলখানা ভর্ত্তি হইয়া গেল। এই ঘটনা বাঙ্‌লার যুবকদের দেশপ্রীতি ও আত্মত্যাগের এক সার্থক নিদর্শন। দেশবন্ধুর উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইল। গভর্ণমেণ্ট স্থায়ী জেলখানায় স্থান সঙ্কুলান করিতে না পারিয়া খিদিরপুর ডকে সাময়িক জেলখানা স্থাপন করিলেন। এই স্বেচ্ছাসেবক দল সংগ্রহ ও পরিচালনার কার্য্যে সুভাষচন্দ্র অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দেন।

 ১৯২১ সালের ১০ই ডিসেম্বর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ও সুভাষচন্দ্র প্রমুখ নেতৃবর্গ যুবরাজের কলিকাতা-আগমন-উৎসব বর্জন-আন্দোলন উপলক্ষে