পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূমিকা

 আজাদ-হিন্দ ফৌজের কীর্ত্তি-কাহিনী প্রকাশিত হইবার সংগে সংগেই নেতাজীর সম্বন্ধে পুস্তক প্রকাশের হিড়িক পড়িয়া গেছে। অনেকেই নেতাজীর প্রতি জনসাধারণের অপরিসীম শ্রদ্ধা ও নেতাজীর জীবন-কথা জানিবার জন্য তাহাদের আকুল আগ্রহের সুযােগ লইয়া স্বল্পতম পরিশ্রমেই এই শ্রেষ্টতম মহাপুরুষের জীবন-কাহিনী জনসাধারণের সমক্ষে উপস্থাপিত করিতে চাহিয়াছেন। নব্য বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানের জীবন-কথা রচনায় বাঙ্গালী গ্রন্থকারদের এই মানসিক শৈথিল্য ও শ্রদ্ধার অভাব, বাজার দখলের জন্য প্রকাশক ও গ্রন্থকারদের এই অশােভন ক্ষিপ্রতা আমাদিগকে অত্যন্ত বেদনা দিয়াছে। নেতাজীর সম্বন্ধে এতাবৎ প্রকাশিত বহু পুস্তকই শিশু-সাহিত্যপদবাচ্য হইয়াছে ও প্রশস্তিবাচনমাত্রে পর্য্যবসিত হইয়াছে। ফলে, বাংলাভাষায় অদ্যাপি নেতাজীর পূর্বাপর চিন্তাধারা ও সাধনা-সম্বলিত একখানি নির্ভরযােগ্য পূর্ণাঙ্গ জীবন-চরিতের বিশেষ অভাব রহিয়াছে। এই বহু-অনুভূত অভাব পূরণের জন্য আমরা নেতাজীর জীবনী রচনায় প্রয়াসী হইয়াছি। নেতাজীর কর্মজীবনের সহিত ঘনিষ্টভাবে জড়িত ছিলেন এমন কোন কৃতী সাহিত্যিক ও কর্মী এই কার্য্যের গুরু দায়িত্ব গ্রহণে অগ্রসর হইয়া আসিলেই প্রথম প্রচেষ্টা হিসাবে আমাদের শ্রম সার্থক মনে করিব।

 নেতাজী সুভাষচন্দ্রের পুণ্য কীর্ত্তিকথা আজ আসমুদ্রহিমাচল সমগ্র ভারতের পরম শ্রদ্ধা ও ধ্যানের সম্পদ হইয়াছে। তাঁহার বিমল যশােগাথায় সমস্ত দিঙ্‌মণ্ডল মুখরিত। ভারতের মুক্তিসাধনার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তিনি বাঙ্গালীর আসন পুনরায় সুপ্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। নেতাজী সুভাষচন্দ্রের প্রতি অবাঙ্গালী ভারতবাসী, হিন্দু-মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ—