পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৩৩

 ১৯২৪ সালে কলিকাতা কর্পোরেশনের নির্ব্বাচনে ‘স্বরাজ্যদল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ফলে, সেই বৎসর কর্পোরেশনে ‘স্বরাজ্যদলের’ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশবন্ধু বৃটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় মহানগরীর প্রথম নাগরিকের সম্মানলাভ করিয়া জগতের সমক্ষে স্বাধিকার লাভে ভারতের জনমত প্রতিষ্ঠা করেন। কর্পোরেশনে সুভাষ চন্দ্র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধান কর্ম্মকর্ত্তা নির্ব্বাচিত হন। প্রায় মাসাধিক কাল বিরোধিতা করিয়া গভর্ণমেণ্ট অবশেষে সুভাষচন্দ্রের নিয়োগ অনুমোদন করেন। সুভাষচন্দ্রের বয়স তখন মাত্র ২৭ বৎসর। পেট্রোগ্রাড্ সোভিয়েটের নির্ব্বাচনে লেনিন ও ষ্ট্যালিনের বিজয় ও শ্রমিকদলের নেতৃত্বলাভ ও স্বৈরাচারী ‘জার’ নিকোলাসের পতন ও বহুকালস্থায়ী জারতন্ত্রের অবসানের সূচনা করে— কলিকাতা কর্পোরেশনে গুরু-শিষ্য দেশবন্ধু ও সুভাষচন্দ্রের পাশাপাশি অবস্থিতি ও প্রতিষ্ঠালাভেও সেইরূপ কলিকাতার পৌরশাসনে নাগরিকগণ বৈদেশিক আমলাতন্ত্র ও শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের রাহু গ্রাস হইতে বহুলাংশে মুক্তিলাভ করে।

 এতদিন কলিকাতা সহরের তত্ত্বাবধান করিতেন, সহরের শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীরা ও তাহাদের ভারতীয় চাটুকার দল। এই প্রথম জাতীয়তাবাদী নিঃস্বার্থ দেশসেবকগণ কর্পোরেশনের পরিচালনার অধিকার লাভ করিলেন। প্রধান কর্ম্মকর্তার পদে কর্ম্মযোগী সুভাষচন্দ্র অধিষ্ঠিত হইলেন। ফলে, কলিকাতার যে অঞ্চল কোনদিন নগর-প্রধানদের দৃষ্টিগোচর হত না, যে সব দরিদ্র ও অশিক্ষিত সহরবাসী এতদিন উপেক্ষিত ও অনাদৃত হইয়া আসিয়াছে, সেই সব উপেক্ষিত অঞ্চলের উন্নতিবিধান ও দরিদ্র সাধারণের মঙ্গলসাধনই এখন কর্পোরেশনের প্রধান ও প্রথম কর্ত্তব্য হইয়া দাঁড়াইল। বস্তুতঃ দেশবন্ধু ও সুভাষ চন্দ্র নূতন আদর্শে ও নূতন পরিকল্পনায় কর্পোরেশনকে সম্পূর্ণ নূতন রূপ দান করিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাদানকল্পে বহু অবৈতনিক বিদ্যালয় স্থাপিত হইল। দরিদ্র ও দুঃস্থ