পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩8
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

নরনারীর চিকিৎসার জন্য বহু দাতব্য চিকিৎসালয় খোলা হইল। সহরের স্বাস্থ্যরক্ষা ও পরিচ্ছন্নতার উন্নততর ব্যবস্থা, দরিদ্র সহরবাসীকে বিনামূল্যে দুগ্ধ বিতরণ ব্যবস্থা, মাতৃমঙ্গল শিশুমঙ্গল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান স্থাপন, এই সমস্ত জনহিতকর অনুষ্ঠান দ্বারা কর্পোরেশনকে একটি বৃহৎ সেবাকেন্দ্র ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হইল। দেশের খ্যাতনামা সন্তানদের নামে রাজপথের ও পার্কের নামকরণ হইতে লাগিল। কর্পোরেশনের কর্ম্মী ও সচিববৃন্দ জাতীয় পরিচ্ছদ পরিধান ও খদ্দর ব্যবহার করিতে লাগিলেন। সর্ব্বপ্রকারে স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহার ও প্রচার তাঁহাদের ব্রত হইল। ফলে, স্বদেশী শিল্পের প্রসার ও প্রচার হইতে লাগিল। রাজকর্ম্মচারীদের স্থলে জন-নায়কগণ নাগরিক সম্বর্ধনা ও সম্মান লাভের সুযোগ পাইলেন। এক কথায় কলিকাতা কর্পোরেশন অচিরেই দেশের জনসাধারণের প্রতিনিধিমূলক জাতীয় প্রতিষ্ঠান ও তাহাদের অভাব-অভিযোগের প্রতীকার স্থল হইয়া উঠিল। আজিকার এই স্বার্থদ্বন্দ্বকলুষিত দলাদলি ও পঙ্কিলতার মাঝে সেদিনকার কর্পোরেশনের কথা ভাবিতেও আনন্দ হয়। সেই কর্পোরেশন ছিল, জাতীয় জাগরণের বিজয়স্তম্ভ, জনগণের মঙ্গলকামী প্রতিনিধি, দেশসেবকগণের কর্ম্ম ও সাধনাস্থল। সে যুগের কলিকাতা কর্পোরেশনের এই বিপুল কীর্ত্তি সুভাষচন্দ্র ও দেশবন্ধুর ন্যায় সেবাব্রতী নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিকদের নিরলস সাধনারই ফল। প্রধান কর্ম্মকর্তার পদে কাজ করিয়া সুভাষচন্দ্র কর্পোরেশনের সকল কর্ম্মচারী, কাউন্সিলার ও জনসাধারণের গভীর শ্রদ্ধা ও প্রীতি অর্জ্জন করিয়াছিলেন। কলিকাতার মত মহানগরীর পৌরশাসনকার্য্যে তিনি যেরূপ দক্ষতা, কর্ম্মশক্তি ও সাধুতার পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহা পৃথিবীর যে কোন লব্ধকীর্ত্তি দেশনায়কের পক্ষে গৌরব ও শ্লাঘার বিষয়। মিত্রপক্ষ ও শত্রুপক্ষ সকলেই এক বাক্যে তাঁহার কার্য্যের ও পরিচালনক্ষমতার উচ্ছসিত প্রশংসা করিয়াছেন। কর্পোরেশনের প্রধান কর্ম্মকর্তা হিসাবে তাঁহার