পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

“আপনি বোধ হয় ইতিপূর্ব্বে শুনিয়াছেন যে আমাদের অনশন ব্রত একেবারে নিরর্থক বা নিষ্ফল হয় নাই। গভর্ণমেণ্ট আমাদের ধর্ম্ম বিষয়ে দাবী স্বীকারকরিতে বাধ্য হইয়াছেন এবং অতঃপর বাঙ লাদেশের রাজবন্দী পূজার খরচ বাবদ বাৎসরিক ত্রিশটাকা allowance পাইবেন। ত্রিশটাকা অতি সামান্য এবং ইহাদ্বারা আমাদের খরচ কুলাইবেনা; তবে যে Principle গভর্ণমেণ্ট এতদিন স্বীকার করিতে চান নাই তাহা যে এখন স্বীকার করিয়াছেন, ইহাই আমাদের সব চেয়ে বড় লাভ। টাকার কথা সর্ব্বক্ষেত্রে সর্ব্বকালে অতি তুচ্ছ কথা। পূজার দাবী ছাড়া আমাদের অন্যান্য অনেকগুলি দাবীও গভর্ণমেণ্ট পূরণ করিয়াছেন। বৈষ্ণবের ভাষায় বলিতে গেলে আমাকে কিন্তু বলিতে হইবে “এহবাহ্য”। অথাৎ অনশনব্রতের সব চাইতে বড় লাভ অন্তরের বিকাশ ও আনন্দ লাভ। দাবীপূরণের কথা বাহিরের কথা, লৌকিক জগতের কথা। suffering ব্যতীত মানুষ কখন ও নিজের অন্তরের আদর্শের সহিত অভিন্নতা বোধ করিতে পারে না এবং পরীক্ষার মধ্যে না পড়িলে মানুষ কখনও স্থির নিশ্চিন্ত ভাবে বলিতে পারে তাহার অন্তরে কত অপার শক্তি আছে। এই অভিজ্ঞতার ফলে আমি নিজেকে আরও ভালভাবে চিনিতে পারিয়াছি এবং নিজের উপর আমার বিশ্বাস শতগুণে বাড়িয়াছে।”


 দুই বৎসর অতীত হইতে চলিল সুভাষচন্দ্রকে বিনা বিচারে ও বিনা অপরাধে আটক রাখা হইয়াছে। প্রকাশ্য আদালতে বিচারের জন্য বারংবার দাবী জানাইয়াও কোন সুফল হয় নাই। অবশেষে ১৯২৬ সালের নভেম্বর মাসে বাঙ্লা কংগ্রেস এক অভিনব উপায় অবলম্বন করেন। এই মাসে ব্যবস্থাপক সভার নির্ব্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উত্তর কলিকাতা অমুসলমান কেন্দ্র হইতে কংগ্রেস কমিটি কর্ত্তৃক সুভাষচন্দ্র ব্যবস্থাপক সভার সভ্যপদপ্রার্থী মনোনীত হন। এই প্রসঙ্গে উত্তর কলিকাতার অধিবাসিগণের উদ্দেশ্যে এক আবেদন পত্রে তিনি লিখেন “নিজের জীবন পূর্ণরূপে