পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

হয় নাই। দেশবাসী তাঁহাকে বিপুল ভোটাধিক্যে প্রতিনিধি নির্ব্বাচিত করিয়া সুযোগ্য নেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।

 এদিকে সুভাষচন্দ্রের শরীরের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হইয়া পড়ে। মান্দালয়ের নির্জ্জন কারাবাসে তাঁহার স্বাস্থ্য ভাঙিয়া গেল। ঐ স্থানের অস্বাস্থ্যকর আবহাওয়া ও নিরানন্দ নির্জ্জনতা তাঁহার শরীরে মারাত্মক ক্ষয়রোগ আনিয়া দেয়। তদুপরি তিনি অজীর্ণ রোগে বিশেষরূপে আক্রান্ত হইলেন। দেহের ওজন ৪০ পাউণ্ড কমিয়া যায়। এই অবস্থায় তাঁহাকে ইন্‌সিন্ জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯২৭ সালের এপ্রিল মাসে তিনি একেবারে শয্যাশায়ী হইয়া পড়েন। সুভাষচন্দ্রের ভ্রাতা ডাঃ সুনীলচন্দ্র বসু ও সরকারী মেডিক্যাল অফিসার লেঃ কর্ণেল কেলসাল তাঁহার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং অবস্থা উদ্বেগজনক বলিয়া মত প্রকাশ করেন। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় সরকার পক্ষ হইতে স্বরাষ্ট্রসচিব মিঃ মোবার্লী সুভাষচন্দ্রের নিকট স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য সুইজারল্যাণ্ডে যাইবার প্রস্তাব করেন। সুভাষচন্দ্রকে এইরূপ সর্ত্ত দেওয়া হয় যে, তিনি কলিকাতা বা ভারতের অপর কোন বন্দরে পদার্পণ না করিয়া সরাসরি ইউরোপ যাত্রা করিবেন। সুভাষচন্দ্র এই প্রস্তাবে অসন্মতি জ্ঞাপন করেন। কারণ তাঁহার মতে “জন্মভূমি হইতে চিরকালের মত নির্ব্বাসন অপেক্ষা জেলে থাকিয়া মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়।” এই প্রসঙ্গে ইনসিন জেল হইতে তিনি তাঁহার ভ্রাতা শ্রীযুক্ত শরৎচন্দ্র বসুকে মিঃ মৌবার্লীর প্রস্তাব সম্বন্ধে যে পত্র লিখেন তাহার প্রয়োজনীয় অংশ উদ্ধৃত করিতেছি। “দেখা যাইতেছে, সরকার ছোটদাদার (ডা: সুনীলচন্দ্র বসুর) প্রদত্ত রোগবিবরণ গ্রহণ করেন নাই, যদিও তাঁহার প্রদত্ত স্বাস্থ্য অর্জ্জন উপায় গ্রহণ করিয়াছেন, কারণ মিঃ মৌবার্লী স্পষ্টই বলিয়াছেন, “সুভাষচন্দ্র যে অত্যধিক পীড়িত হন নাই এবং একেবারে কর্ম্মশক্তিহীন হন নাই, তাহা সকলেই বুঝিতে পারিবেন।” আমার জানিতে কৌতূহল হয়, সরকার কবে আমাকে “অত্যধিক পীড়িত”