পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৪১

বা “একেবারে কর্মশক্তিহীন” মনে করিবেন। যেদিন সকল চিকিৎসক ঘোষণা করিবেন আমার রোগমুক্তি অসম্ভব এবং মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মৃত্যু হইতে পারে, সেইদিন কি? তাছাড়া ছোট দাদার রোগবিবরণ যদি তাঁহারা স্বীকার করিতে রাজী না হন, তাহা হইলে যাহা মাত্র বাহ্যতঃ তাঁহার অনুমোদন তাহা গ্রহণ করিতেই বা সরকার এত ব্যস্ত কেন? ছোট দাদা এ অনুমোদন করেন নাই যে, আমাকে বাড়ীতে যাইতে দেওয়া হইবে না, বা বিদেশে যাইবার পূর্ব্বে আমি আমার আত্মীয়স্বজনকে দেখিতে পাইব না। তিনি একথাও বলেন নাই যে, আমি যে জাহাজে যাইব তাহা কোন ভারতীয় বন্দরে নোঙর করিতে পারিবে না। তিনি একথাও বলেন নাই যে, যদি আমার নষ্ট স্বাস্থ্য উদ্ধার হয় তাহা হইলে যতদিন আর্ডিনান্স আইন থাকিবে ততদিন দেশে থাকিতে পারিব না। এই সকল দেখিয়া আমার সন্দেহ হয়, সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য আমার নষ্ট স্বাস্থ্য উদ্ধারের ব্যবস্থা নয়।

 মিঃ মৌবার্লী প্রকৃত পক্ষে বলিয়াছেন যে, দুইটি পথ অবশিষ্ট আছে, তাহা (১) জেলে বন্দী হইয়া অবস্থান কিংবা, (২) কোন বিদেশে যাইয়া স্বাস্থ্য অর্জ্জনের চেষ্টা ও অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য অবস্থান। কিন্তু সত্যই কি এই দুয়ের মধ্যে অন্যকোন মধ্যপন্থা নাই? আমার তা মনে হয় না। সরকারের ইচ্ছা যে আমি অর্ডিনান্স আইন উঠিয়া না যাওয়া পর্য্যন্ত, অর্থাৎ জানুয়ারী ১৯৩০ সাল পর্য্যন্ত, বন্দী থাকি। কিন্তু এ আইন যে ১৯৩০ সালের পরও পুনরায় নূতন করিয়া প্রবর্ত্তিত হইবে না, তাহা কে বলিতে পারে? গত অক্টোবর মাসে সি. আই. ডি পুলিসের কর্ত্তা মিঃ লোম্যানের সহিত এ প্রসঙ্গে আমার যে কথা হইয়াছিল তাহা একেবারেই আশাপ্রদ নয়। ১৯২৯ সালে যদি এই অর্ডিনান্স আইনকে চিরকালের জন্য বিধিবদ্ধ করিয়া রাখিবার আন্দোলন হয় তাহাতে কিছুমাত্র আশ্চর্য্যান্বিত হইব না। তাহা হইলে আমাকে চিরস্থায়ীভাবে বিদেশে বাস করিতে হইবে এবং এইরূপ