পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

আমাকে তবু বলা হইয়াছিল, যে অস্ত্র-শস্ত্র ও বিস্ফোরক প্রভৃতি আমদানী সরকারী কর্ম্মচারী হত্যা প্রভৃতি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আমি অপরাধী। ঐ সম্বন্ধে অনেকে আমার বক্তব্য জানাইতে বলিয়াছিলেন। আমি উত্তরে জানাইতেছি যে, আমি নির্দ্দোষ। আমার বিশ্বাস, পরলোকগত স্যার এডওয়ার্ড মার্শাল হল বা স্যার জন সাইমন আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ইহা অপেক্ষা অধিক কিছু বলিতে পারিতেন না। দ্বিতীয়বার অভিযোগগুলি আমার নিকট উপস্থিত করা হইলে আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, এত লোক থাকিতে পুলিস আমাকে ধরিল কেন? আমার মনে হয়, উহাই সন্তোষজনক উত্তর। আমার গ্রেফ্‌তারের পর হইতে বাঙ্‌লা সরকার আমার অধীন ব্যক্তিদিগকে প্রতিপালনের জন্য বা আমার গৃহাদি রক্ষার জন্য কোনরূপ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেন নাই। ঐ বিষয়ে আমি বড়লাটের নিকট আবেদন করিলে বাঙ্‌লা সরকার সে আবেদন চাপিয়া রাখিয়াছিলেন। তারপর আবার আমাকে তিন বৎসর বিদেশে থাকিতে বলা হইতেছে। ইউরোপে নির্ব্বাসনের সময় আমার নিজের খরচ নিজেকে যোগাইতে হইবে। এ কিরূপ যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব, তাহা বুঝিতে পারি না। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দে আমার যেরূপ স্বাস্থ্য ভাল ছিল, আমাকে অন্ততঃ সেইরূপ স্বাস্থ্যবান করিয়া সরকারের মুক্তি দান করা উচিত। কারাবাসের জন্য আমার স্বাস্থ্যহানি হইলে সরকার কি তাহার ক্ষতিপূরণ দিবেন না? ইউরোপে যতদিন হৃতস্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্ত না হই ততদিন আমার সকল খরচ সরকারের বহন করা উচিত। কতদিন সরকার এই সকল বিষয়ে অনবহিত থাকিবেন? সরকার যদি ইউরোপ যাইবার পূর্ব্বে আমাকে একবার বাড়ী যাইতে দিতেন, যদি ইউরোপে আমার সকল ব্যয়ভার বহন করিতেন ও রোগমুক্তির পর আমাকে বিনা বাধায় দেশে ফিরিতে দিতেন, তাহা হইলে এই দান সহৃদয়তার পরিচায়ক বলিয়া মনে করিতাম।”