পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 এই সময়েই সুভাষচন্দ্র বাঙ্‌লায় “স্বেচ্ছাসেবক আন্দোলন আরম্ভ করেন। ১৯২৮ সালে কংগ্রেসের অধিবেশন কলিকাতায় অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশন উপলক্ষে সেচ্ছাসেবক-বাহিনী গঠনে তিনি অনন্য সাধারণ কর্ম্ম-কুশলতার পরিচয় প্রদান করেন। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর অধিনায়ক রূপে তিনি সভাপতি পণ্ডিত মতিলাল নেহরুকে বিরাট সমারোহের সহিত সম্বর্দ্ধনা করেন। সভাপতির সম্বর্দ্ধনা কালে যে বিরাট শোভাযাত্রার আয়োজন হইয়াছিল ভারতের জাতীয় ইতিহাসে তাহার তুলনা নাই। জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানও মহাড়ম্বরে নিষ্পন্ন হয়। কলিকাতা কংগ্রেসে সুভাষচন্দ্র “নেহরু কমিটি”র প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, “এই প্রস্তাবের অর্থ এই যে, বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট যদি নেহেরু কমিটি রচিত শাসনতন্ত্র ১৯২৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর বা তৎপূর্ব্বে মানিয়া লয় তাহা হইলে কংগ্রেস উহা গ্রহণ করিবে এবং তদ্দ্বারা ঔপনিবেশিক স্বায়ত্ত শাসনই স্বীকার করিয়া লইবে। কিন্তু আমরা কখনও সেই অবস্থা মানিয়া লইতে পারি না। ‘স্বাধীনতা’ আমরা চাই—এই ‘স্বাধীনতা’ আমাদের সুদূর ভবিষ্যতের আদর্শ নহে—স্বাধীনতা বর্ত্তমানেই আমাদের দাবী।”[১] পণ্ডিত মতিলালের

  1. সুভাষচন্দ্র ও পণ্ডিত জওহরলাল উভয়েই নেহরু কমিটিতে ছিলেন—এমন কি নেহরু রিপোর্টে তাঁহারা স্বাক্ষরও করিয়াছিলেন। পরে কংগ্রেসের অধিবেশনে সুভাষচন্দ্রকে নেহরু রিপোর্টের বিরোধিতা করিয়া এক সংশোধন প্রস্তাব উত্থাপন করিতে দেখিয়া তাঁহার এইরূপ বিসদৃশ আচরণে অনেকেই বিস্মিত হইয়াছিলেন। সুভাষচন্দ্র ইহার যে কৈফিয়ত দেন তাহা এই:—“I have been asked by my friends why I, being a signatory to the Nehru Report, have stood up to speak for independence. I would only refer to the statement made in the body of the report where it is said that the principles of the constitution which we have submitted in the report can be applied in all the entirety to a constitution of independence. I do not think that in moving this amendment my action can be construed as in any way inconsistent.”