পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

যৌবনের হস্তে ন্যস্ত। আমরা পরাধীন হইয়া জন্মিয়াছি একথা সত্য কিন্তু স্বাধীন দেশে মরিব। দেশকে মুক্ত করিয়া মরিব—আসুন আমরা এই প্রতিজ্ঞা করি। আর যদি বা জীবনে মুক্ত ভারতবর্ষের রূপ দেখিতে নাও পারি তবে যেন ভারতবর্ষকে মুক্ত করিতে জীবন বিসর্জ্জন করিতে পারি। মানুষ হইয়া জন্মিয়াছি—মানুষের মত বাঁচিতে চাই। পরাধীনতাই মনুষ্যত্ব বিকাশের প্রধান অন্তরায়। মনুষ্যত্ব লাভের একমাত্র উপায় মনুষ্যত্ব বিকাশের সকল অন্তরায় চুর্ণ করা। যেখানে যখন অত্যাচার অবিচার ও অনাচার দেখিব সেইখানে নির্ভীক হৃদয়ে শির উন্নত করিয়া প্রতিবাদ করিব এবং নিবারণের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিব। অত্যাচার দেখিয়াও যে ব্যক্তি তাহা নিবারণ করিবার চেষ্টা করে না সে নিজের মনুষ্যত্বের অবমাননা করে। যে ব্যক্তি অনাচার নিবারণের প্রচেষ্টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিপন্ন হয়, কারারুদ্ধ হয় অথবা লাঞ্ছিত হয় সে সেই ত্যাগ ও লাঞ্ছনার ভিতর দিয়াই মনুষ্যত্বের গৌরবময় আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়।

 ভারতের তরুণও যুবসমাজকে সুভাষচন্দ্র যে ভাব ও চিন্তাধারায়, যে আদর্শে অনুপ্রাণিত করিতে চাহিয়াছেন, তরুণ সম্প্রদায়কে যে স্বপ্নের নেশায় মাতাইয়া তুলিতে চাহিয়াছেন, যে নূতনের সন্ধানে যুবচিত্তকে আহ্বান করিয়াছেন সুভাষচন্দ্রের নানা ভাষণ ও বাণী হইতে তাহারই কিঞ্চিৎ আভসে উপরে দেওয়া হইল।

তের

 ১৯২৯ সালের ২৫শে ডিসেম্বর লাহোরে ভারতীয় জাতীয় মহাসভার অধিবেশন হয়। সেবারকার কংগ্রেসে বামপন্থীদের উদ্যোগ-আয়োজন দেখিয়া গান্ধীজিও দক্ষিণপন্থী নেতারা কংগ্রেসের সভাপতি মনোনয়নে এমন কুটনৈতিক চাল চালিলেন যে তাহার ফলে বামপন্থীদল দুর্বল হইয়া