পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

বিধি প্রনয়ন করিতে সরকারকে অনুরোধ করা হয়। সুভাষচন্দ্র এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করিতে অস্বীকৃত হন এবং কংগ্রেসদলপতিদের ঘোষণার প্রতিবাদে একটি স্বতন্ত্র ঘোষণাপত্র প্রচার করেন। অমৃতসরের ডাঃ সফিউদ্দিন কিচ্‌লু ও পাটনার অধ্যাপক আবদুল বারি শেষোক্ত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। এই সময় গান্ধীজী ও মতিলাল বড়লাটের সহিত সাক্ষাৎ করেন কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, এই সাক্ষাৎকরের কোনই ফল হয় নাই। ফলে, লর্ড আরউইনের ঘোষণার দুইমাস পরে (২৯শে ডিসেম্বর, ১৯২৯) লাহোর অধিবেশনের কালে দলপতিদের ক্ষীণ আশার শেষ রশ্মিটুকুও নিবিয়া যায়—তাঁহারা শূন্যহস্তে অধিবেশনে যোগদান করিলেন। কংগ্রেসের লক্ষ্য হিসাবে পূর্ণ স্বাধীনতা গৃহীত হইল কিন্তু বোমার আক্রমন হইতে জীবন রক্ষা হওয়ায় বড়লাট বাহাদুরকে যে অভিনন্দন জানান হইয়াছিল সেই অভিনন্দন প্রস্তাব বর্জ্জন করার দাবী জানান সত্ত্বেও সেই প্রস্তাব বর্জন করা হইল না। পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জ্জনের জন্য কংগ্রেসের কি কর্ম্মপন্থা অবলম্বন করা উচিত নিখিল ভারতীয় নেতারা সে বিষয় কিছুই স্থির করিতে পারিলেন না। আন্দোলনের পথ নির্দ্দেশ ও আন্দোলন পরিচালনার ভার গান্ধীজীর উপর ন্যস্ত করিয়াই ক্ষান্ত রহিলেন। একমাত্র সুভাষচন্দ্রই সেদিন কংগ্রেসের সম্মুখে একটি কর্মপন্থা উপস্থাপিত করিয়াছিলেন। এক সংশোধন প্রস্তাব তুলিয়া তিনি বলিলেন যে, দেশের প্রচলিত শাসনযন্ত্র বর্জ্জন করিয়া আয়র্লণ্ডের সিন ফিনের আদর্শে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী (parallel) গভর্ণমেণ্ট স্থাপন করা হউক এবং দেশবাসীকে সেই প্রতিদ্বন্দ্বী গভর্ণমেণ্টের প্রতি অনুগত্য প্রকাশে আহ্বান করা হউক। উক্ত প্রস্তাবে তিনি দেশের শ্রমিক, কৃষক ও যুবসম্প্রদায়কে সংগঠিত করার দাবীও উপস্থিত করেন। কিন্তু নিখিল ভারতীয় নেতৃবৃন্দ কেহই সুভাষচন্দ্রকে সমর্থন করিলেন না। বাঙ্‌লার ডেলিগেটদের একটি প্রধান দল (দেশপ্রিয় সেনগুপ্তের সমর্থকদল) সুভাষচন্দ্রের প্রস্তাব সমর্থন