পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৮১

সর্ব্বাগ্রে প্রয়োজন—স্বাধীনতালাভের পূর্ব্বে শ্রমিকদের কোনরূপ শ্রেণী সংগ্রামে প্রবৃত্ত হওয়া আমি সঙ্গত মনে করি না। শ্রমিক আন্দোলন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হউক কিন্তু তাহা যেন জাতীয়তাবিরোধী (anti-nationalist) না হয়।

 ১৯৩১ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে সুভাষচন্দ্র নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর বঙ্গ পরিভ্রমণে বহির্গত হন। মালদহ জেলার সীমান্তে ট্রেনের কামরায় ফৌজদারী কার্য্যবিধির ১৪৪ ধারা অনুসারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তাঁহার উপর এক আদেশ জারী করেন। ঐ আদেশ দ্বারা তাঁহাকে মালদহ জেলায় প্রবেশ করিতে নিষেধ করা হয়। সুভাষচন্দ্র এই আদেশ মানিতে অস্বীকার করেন। ফলে ষ্টেশনে প্রথম শ্রেণীর আরোহীদের বিশ্রামাগারেই তাঁহার বিচার হয়। এই বিচার সম্পর্কে তাঁহার বক্তব্য জানিতে চাহিলে তিনি বলেন, “এই আদেশে ফৌজদারী দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারার সম্পূর্ণ অপপ্রয়োগ হইয়াছে। আত্মমর্য্যাদাসম্পন্ন ভারতবাসী হিসাবে আমি ইহা মানিতে পারি না। আমি যদি এই আদেশ মানিয়া লই তাহা হইলে নাগরিক হিসাবে আমি কর্ত্তব্যচ্যুত হইব।” বিচারে তাঁহার উপর ৭ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ হয়। সুভাষচন্দ্র রাজসাহী সেণ্টাল জেলে প্রেরিত হন। শোভাযাত্রাদি যাহাতে না হইতে পারে তজ্জন্য রাজশাহীর জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ১৮ই জানুয়ারী স্বয়ং গভীর রাত্রিতে তাঁহাকে রাজসাহী হইতে ত্রিশমাইল দূরবর্ত্তী নাটোর রেলওয়ে ষ্টেশনে আনিয়া গাড়ীতে উঠাইয়া দেন। এই ভাবে তাঁহাকে আলিপুর সেণ্ট্রাল জেলে স্থানান্তরিত করা হয়।

 লাহোর কংগ্রেসে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী ঘোষিত হওয়ার পর হইতে প্রতিবৎসর ২৬শে জানুয়ারী স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপিত হইয়া আসিতেছে। ১৯৩১ সালের স্বাধীনতা দিবসের সভা ও শোভাযাত্রা সরকার বে-আইনী ঘোষণা করেন। কিন্তু কর্পোরেশনের মেয়র সুভাষচন্দ্র সরকারের এই অন্যায় আদেশ অগ্রাহ্য করিয়া স্বয়ং মনুমেণ্টের অভিমুখে শোভাযাত্রা