পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ وا 8 গোমস্ত মহাশয়কে কিঞ্চিৎ প্ৰণামী দিয়া নালিশ করিয়াছে যে, “পরাণ আমাকে লইয়া খায় না”-তখনই পরাণ ধূত হইয়া আসিল । আজি নেপাল মণ্ডল ঐ রূপ মঙ্গলাচৰণ করিয়া নালিশ করিল যে, “পরাণ আমার ভগিনীর সঙ্গে প্ৰসক্তি করিয়াছে’-অমনি পরাণ গ্রেপ্তার হইয়া আবদ্ধ হইল। আজি সম্বাদ আসিল, পরাণের বিধবা ভ্ৰাতৃবধূ গৰ্ভৱতী হইয়াছে—আমনি পরাণকে ধরিতে ছুটিল। আজ পরাণ জমীদারের হইয়া মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে নারাজ, অমনি তাহাকে ধরিতে লোক ছুটিল। গোমস্ত মহাশয়, পরাণের কাছে টাকা আদায় করিয়াই হউক বা জামিন लश्ाई হউক বা কিস্তিবন্দী করিয়াই হউক বা সময়ান্তরে বিহিত করিবার আশায়ই হউক, পুনর্বার পুলিস আসার আশঙ্কায়ই হউক বা বহুকাল আবদ্ধ রাখায় কোন ফল নাই বলিয়াই হউক, পরাণ মণ্ডলকে ছাড়িয়া দিলেন। পরাণ ঘরে গিয়া চাষ আবাদে প্ৰবৃত্ত হইল। উত্তম ফসল জম্মিল। অগ্রহায়ণ মাসে জমীদারের দৌহিত্রীর বিবাহ বা ভ্রাতুপুত্রের অন্নপ্রাশন। বরাদ্দ দুই হাজার টাকা, মহালে মাঙ্গন চড়িল । সকল প্ৰজা টাকার উপর |• আনা দিবে। তাহাতে পাচ হাজার টাকা উঠিবে, দুই হাজার অন্নপ্রাশনের খরচ লাগিবে। -তিন হাজার জমীদারের সিন্দুকে উঠিবে। যে প্ৰজা পারিল, সে দিল—পরাণ মণ্ডলের আর কিছুই নাই-সে দিতে পারিল না। জমীদারী হইতে পুরা পাঁচ হাজার টাকা আদায় হইল না। শুনিয়া জমীদার স্থির করিলেন, একবার স্বয়ং মহালে পদাৰ্পণ করিবেন। তঁহার আগমন হইল-গ্ৰাম পবিত্র হইল। তখন বড় বড় কালো কালো পাট আনিয়া, মণ্ডলের কাছারির দ্বারে বঁাধিয়া যাইতে লাগিল। বড় বড় জীবন্ত রুই, কাতলা, মুগাল, উঠানে পড়িয়া ল্যাজ আছড়াইতে লাগিল । বড় বড় কালো কালো বাৰ্ত্তাকু, গোল আলু, কপি, কলাইসু'টিতে ঘর পুরিয়া যাইতে লাগিল। দধি দুগ্ধ ঘূত নবনীতের ত কথা নাই। প্ৰজাদিগের ভক্তি অচলা, কিন্তু বাবুর উদর তেমন নহে। বাবুর কথা দূরে থাকুক, পাইক পিয়াদার পর্য্যন্ত উদরাময়ের লক্ষণ দেখা যাইতে লাগিল । কিন্তু সে সকল ত বাজে কথা। আসল কথা, জমীদারকে “আগমনী,” “নজর” বা “সেলামি” দিতে হইবে। আবার টাকার অঙ্কে y০ বসিল । কিন্তু সকলে এত পারে না । যে পারিল, সে দিল। যে পারিল না, সে কাছারিতে কয়েদ হইল, অথবা তাহার দেন। दाकिन्न जाभिव्न ठूछेठल ।