পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৮৫

ऊद्दूरुद्र* ዓ¢ সভ্যতার অনুকরণের ফল। রোমক সভ্যতাও য়ুনানী সভ্যতার অনুকরণফল। যে পরিমাণে বাঙ্গালি, ইংরেজের অনুকরণ করিতেছে, পুরাবৃত্তজ্ঞ জানেন যে, ইউরোপীয়েরা প্ৰথমাবস্থাতে তদপেক্ষা অল্প পরিমাণে যুনানীয়ের, বিশেষতঃ রোমকীয়ের অনুকরণ করেন নাই। প্রথমাবস্থাতে অনুকরণ করিয়াছিলেন বলিয়াই এখন এ উচ্চসোপানে দাড়াইয়াছেন। শৈশবে পরের হাতে ধরিয়া যে জলে নামিতে না শিখিয়াছে, সে কখনই সাতার দিতে শিখে নাই ; কেন না, ইহ জন্মে তাহার জলে নামাই হইল না। শিক্ষকের লিখিত আদর্শ দেখিয়া যে প্ৰথমে লিখিতে না শিখিয়াছে, সে কখনই লিখিতে শিখে নাই। বাঙ্গালি যে ইংরেজের অনুকরণ করিতেছে, ইহাই বাঙ্গালির ভরসা। তবে লোকের বিশ্বাস এই যে, অনুকরণের ফলে কখন প্ৰথম শ্রেণীর উৎকর্ষ প্ৰাপ্তি হয় না। কিসে জানিলে ? প্রথম, সাহিত্য সম্বন্ধে দেখ। পৃথিবীর কতকগুলি প্ৰথম শ্রেণীর কাব্য, কেবল অনুকরণ মাত্র। ড্রাইডেন এবং বোয়ালোর অনুকারী পোপ, পোপের অনুকারী জনসন। এইরূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লেখকদিগের দৃষ্টান্ত দেখাইয়া আমরা এ কথা সপ্রমাণ করিতে চাহি না । বাজিলের মহাকাব্য, হোমরের প্রসিদ্ধ মহাকাব্যের অনুকরণ। সমুদয় রোমকসাহিত্য, যুনানীয় সাহিত্যের অনুকরণ। যে রোমকসাহিত্য বৰ্ত্তমান ইউরোপীয় সভ্যতার ভিত্তি, তাঙ্গা অনুকরণ মাত্র। কিন্তু বিদেশীয় উদাহরণ দূরে থাকুক। আমাদিগের স্বদেশে দুইখানি মহাকাব্য আছে—তাহাকে মহাকাব্য বলে না, গৌরবার্থ ইতিহাস বলে-তােহা পৃথিবীর সকল কাব্যের শ্ৰেষ্ঠ । গুণে উভয়ে প্রায় তুল্য ; অল্প তারতম্য। একখানি আর একখানির অনুকরণ । মহাভারত যে রামায়ণের পরকালে প্ৰণীত, তাহা হুইলর সাহেব ভিন্ন বোধ হয়। আর *হই সহজ অবস্থায় অস্বীকার করিবেন না। অন্যান্য অনুকৃত এবং অনুকরণের নায়কসকলে যতটা প্ৰভেদ দেখা যায়, রামে ও যুধিষ্ঠিরে তাহার অপেক্ষা অধিক প্ৰভেদ নহে। *ামায়ণের অমিতবলধারী বীর, জিতেন্দ্ৰিয়, ভ্ৰাতৃবৎসল লক্ষ্মণ মহাভারতে অৰ্জ্জুনে পরিণত ইষ্টয়াছেন, এবং ভরত শত্রুঘ্ন নকুল সহদেব হইয়াছেন। ভীম, নূতন সৃষ্টি, তবে কুম্ভকর্ণের একটু ছায়ায় দাড়াইয়াছেন। রামায়ণে রাবণ, মহাভারতে দুৰ্য্যোধন ; রামায়ণে বিভীষণ, শই ভারতে বিদুর ; অভিমনু্য, ইন্দ্ৰজিতের অস্থিমজা লইয়া গঠিত হইয়াছে। এদিকে রাম ভ্রাতা ও পত্নী সহিত বনবাসী ; যুধিষ্ঠিরও ভ্রাতা ও পত্নী সহিত বনবাসী। উভয়েই রাজ্যচু্যত । একজনের পত্নী অপহৃত, আর একজনের পত্নী সভামধ্যে অপমানিত ; উভয়