পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শকুন্তলা, মিরন্দা এবং দেসন্দিমোনা প্রথম, শকুন্তলা ও মিরান্দা উভয়েই ঋষিকন্যা ; প্রস্পেরে ও বিশ্বামিত্র উভয়েই রাজৰ্ষি। উভয়েই ঋষিকন্যা বলিয়া, অমানুষিক সাহায্যপ্ৰাপ্ত। মিরান্দা এরিয়াল-রক্ষিতা, শকুন্তলা অন্সরোরক্ষিতা । উভয়েই ঋষি-পালিতা। ‘ দুইটিই বনলতা—দুইটিরই সৌন্দৰ্য্যে উদ্যােনলতা পরাভূত। শকুন্তলাকে দেখিয়া, রাজাবরোধবাসিনীগণের স্নানীভূত রূপলাবণ্য দুষ্মন্তের স্মরণ-পথে আসিল ; শুদ্ধান্ত দুর্লভমিদং বপুরাশ্রমবাসিনো যদি জনস্য। দূৱীকৃতা: খলু গুণৈরুদ্যােনলতা বনলতাভি: | ফর্দিনন্দও মিরান্দাকে দেখিয়া সেইরূপ ভাবিলেন, Full many a lady I have eyed with best regard, and many a time The harmony of their tongues hath into bondage Brought my too diligent ear: for several virtues Have I liked several women ; but you, O you, So perfect and so peerless, are created Of overy creature's best উভয়েই অরণ্যমধ্যে প্ৰতিপালিতা ; সরলতার যে কিছু মোহমন্ত্র আছে, উভয়েই তাহাতে সিদ্ধ। কিন্তু মনুষ্যালয়ে বাস করিয়া, সুন্দর, সরল, বিশুদ্ধ রমণীপ্ৰকৃতি, বিকৃতি প্ৰাপ্ত হয়—কে আমায় ভাল বাসিবে, কে আমায় সুন্দর বলিবে, কেমন করিয়া পুরুষ জয় করিব, এই সকল কামনায়, নানা বিলাস বিভ্ৰমাদিতে, মেঘবিলুপ্ত চন্দ্ৰমাবৎ, তাহার মাধুৰ্য্য কালিমাপ্রাপ্ত হয়। শকুন্তলা এবং মিরান্দায় এই কালিমা নাই; কেন না, তাহারা লোকালয়ে প্ৰতিপালিত নহেন। শকুন্তলা বন্ধল পরিধান করিয়া ক্ষুদ্র কলসী হস্তে আলবালে জলসিঞ্চন করিয়া, দিনপাত করিয়াছেন- সিঞ্চিত জলকণাবিধৌত নব মল্লিকার মত নিজেও শুভ্ৰ, নিষ্কলঙ্ক, প্ৰফুল্ল, দিগন্তসুগন্ধবিকীর্ণকারিণী। র্তাহার ভগিনীমোহ, নব মল্লিকার উপর ; ভ্ৰাতৃস্নেহ, সহকারের উপর ; পুত্ৰস্নেহ, মাতৃহীন হরিণশিশুর উপর ; পতিগৃহ গমনকালে ইহুদিগের কাছে বিদায় হইতে গিয়া, শকুন্তলা অশ্রুমুখী, কাতরা, বিবশী। শকুন্তলার