পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামঃ হিন্দুধৰ্ম্মগ্রন্থসকলে “কাম” শব্দটি সর্বদা ব্যবহৃত হইয়া থাকে। যে কামাত্মা বা কামার্থী, তাহার পুনঃ পুনঃ নিন্দ আছে। কিন্তু সাধারণ পাঠক এই “কাম” শব্দের অর্থ বুঝিতে বড় গোল করেন, এই জন্য সকল স্থানে তঁাহারা শাস্ত্ৰাৰ্থ বুঝিতে পারেন না। র্তাহারা সচরাচর ইন্দ্ৰিয়বিশেষের পরিতৃপ্তির ইচ্ছার্থে ঐ শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকেন, এবং শাস্ত্ৰেও ঐ অর্থে ইহা ব্যবহৃত হইয়াছে, ইহাই তেঁাহারা বুঝেন। সেটা ভ্ৰান্তি । মহাভারত হইতে দুই একটা কথা উদ্ধৃত করিয়া আমরা কাম শব্দের অর্থ বুঝাইতেছি । “পঞ্চ ইন্দ্ৰিয়, মন ও হৃদয় স্ব স্ব বিষয়ে বৰ্ত্তমান থাকিয়া যে গ্ৰীতি উপভোগ করে, তাহারই নাম কাম৷ ” ( বনপৰ্ব্ব, ৩৩ অধ্যায় ) । ইহা একেবারে নিন্দনীয় বিষয় বলিয়া স্থির হইতেছে না । “মিন ও হৃদয়” এই কথা না বলিয়া কেবল যদি পঞ্চ ইন্দ্ৰিয়ের কথা বলা হইত, তাহা হইলে বুঝা যাইত যে, ইন্দ্ৰিয়বশ্বতা (Sensuality) এই দুস্থপ্রবৃত্তিরই নাম কাম। কিন্তু “মন” ও “হৃদয়” থাকাতে সে কথা খাটিতেছে না। স্থানান্তরে বলা হইতেছে যে, “স্রকচন্দনাদিরূপ দ্রব্য স্পর্শ বা স্বর্ণাদিরূপ। অর্থ লাভ হইলে মানুষ্যের যে গ্ৰীতি জন্মে, তাহারই নাম কাম ।” ইহাতে দেখা যাইতেছে যে, প্রথমতঃ উহা কোন প্রকার প্রবৃত্তি বা বৃত্তি নহে; প্ৰবৃত্তি বা বৃত্তির পরিতৃপ্তাবস্থা মাত্র। দ্বিতীয়তঃ দেখা যাইতেছে যে, উহা সকল সময়ে নিন্দনীয় বা জঘন্য সুখ নহে। উহা সদসৎ কৰ্ম্মের ফল। এই জন্য পশ্চাৎ কথিত হইতেছে যে, “উহা কৰ্ম্মের এক উৎকৃষ্ট ফল। মনুষ্য এইরূপে ধৰ্ম্ম, অর্থ ও কাম, এই তিনের উপর পৃথক পৃথক রূপে দৃষ্টিপাতপূর্বক কেবল ধৰ্ম্মপর বা কামপর হইবে না। সতত সম-ভাবে এই ত্রিবর্গের অনুশীলন করিবে। শাস্ত্ৰে কথিত আছে যে, পূর্বাস্তুে ধৰ্ম্মানুষ্ঠান, মধ্যাহ্নে অর্থচিন্তা ও অপরাহে কামানুশীলন করিবে ।” “কেবল ধৰ্ম্মপর হইবে না।” এমন একটা কথা শুনিলে হঠাৎ মনে হয়, যে ব্যক্তি এ উপদেশ দিতেছে, সে ব্যক্তি হয় ঘোরতর অধাৰ্ম্মিক, নয়। সে ধৰ্ম্ম শব্দ কোন বিশেষ অর্থে ব্যবহার করিতেছে। এখানে দুই কথাই কিঞ্চিৎ পরিমাণে সত্য। এখানে বক্তা খোদ ভীমসেন ; তিনি অধাৰ্ম্মিক নহেন, কিন্তু তিনি যুধিষ্ঠির বা অর্জনের ন্যায় ধৰ্ম্মের সর্বোচ্চ সোপানে উঠেন নাই। এবং ধৰ্ম্ম শব্দও তিনি বিশেষ অর্থে ব্যবহার করিতেছেন। তঁহার e 25, SRSR, VANT I