পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/২৮৫

ৰঙ্গে ব্ৰাহ্মণাধিকায় a আদিশূরের সমকালবৰ্ত্তী দক্ষ হইতে তদ্বংশজাত, এবং বল্লালের সমকালবৰ্ত্তী বহুরূপ অষ্টম পুরুষ। আদিশূরের সম-৮{লবৰ্ত্তী বেদগৰ্ভ হইতে তদ্বংশজাত, এবং বল্লালের সমকালবৰ্ত্তা শিশু ৮ম পুরুষ ; তদ্রুপ ভট্টনারায়ণ হইতে মহেশ্বর ১০ম পুরুষ ; এবং শ্ৰীহৰ্ষ হইতে উৎসাহ ১৩শ পুরুষ। কেবল ছান্দড় হইতে কানু ৪র্থ পুরুষ। গড়ে আদিশূর হইতে বল্লাল পৰ্য্যন্ত নয়। পুরুষই পাওয়া যায়। প্ৰচলিত রীতি এই যে, ভারতবর্ষীয় ঐতিহাসিক গণনায় এক পুরুষে ১৮ বৎসর পড়তা করা হইয়া থাকে। তাহা হইলে নয়। পুরুষে ১৬২ বৎসর পাওয়া যায়। আমরা অন্য হিসাবে বল্লাল ও আদিশূরে ১৫৫ বৎসরের প্রভেদ পাইয়াছি। এ গণনার সঙ্গে, সে গণনা মিলিতেছে । অতএব এ ফল গ্রাহ্য। বল্লাল আদিশূরের সাদ্ধৈক শতাব্দী পীরগামী । বিদ্যানিধি মহাশয়ের গ্রন্থে জানা যায় যে, যখন বল্লাল কৌলীন্য সংস্থাপন করেন, তখন আদিশূরানীত পঞ্চ ব্ৰাহ্মণগণের বংশে একাদশ শত ঘর ব্ৰাহ্মণ ছিল। দেড় শত বৎসরে ঈদৃশ বংশবৃদ্ধি বিস্ময়কর বলিয়া বোধ হয়, কিন্তু যদি বিবেচনা করা যায় যে, তৎকালে বহুবিবাহ প্ৰথা বিশেষ প্রকারে প্রচলিত ছিল, তাহা হইলে ইহা বিস্ময়কর বোধ হইবে না। বহুবিবাহ যে বিশেষরূপেই প্রচলিত ছিল, তাহা ঐ পঞ্চ ব্ৰাহ্মণের পুত্রসংখ্যার পরিচয় লইলেই বিশেষ প্রকারে বুঝা যাইবে । বিদ্যানিধি মহাশয়ের ধূত মিশ্র গ্রন্থের বচনে দেখা যায় যে, ভট্টনারায়ণের ১৬ পুত্র, দক্ষের ১৬ পুত্র, বেদগর্ভের ১২ পুত্র, শ্ৰীহঁর্ষের ৪ পুত্র, এবং ছান্দড়ের ৮ পুত্র। মোট ৫ পাঁচ জনে বাঙ্গালায্য ৫৬ পুত্র রাখিয়া পরলোক গমন করিয়াছিলেন । এই ৫৬ পুত্ৰ ৫৬টি গ্রাম প্রাপ্ত হইয়া তথায় বাস করেন, সেই ৫৬ গ্রাম হইতে রাঢ়ীয়দিগের ৫৬টি গাই । যখন দেখা যাইতেছে যে, একপুরুষ মধ্যে ৫ ঘর হইতে ৫৬ ঘর অর্থাৎ ১১ গুণ বৃদ্ধি ঘটিয়াছিল, তখন নয়। পুরুষের শতগুণ বৃদ্ধি নিতান্ত সম্ভব। বরং অধিক ; কেন না, পঞ্চ ব্ৰাহ্মণ অধিক বয়সে বাঙ্গালায় আসিয়াছিলেন, অতএব তঁাহারা বাঙ্গালায় সুব্রাহ্মণ বৃদ্ধি করিবার তাদৃশ সময় পান নাই, কিন্তু তঁহাদিগের বংশাবলী কৈশোর হইতে পিতৃত্ব স্বীকার করিতেন, ইহা সহজে অনুমেয় । সুবিখ্যাত ফুলের মুখটি নীলকণ্ঠ ঠাকুরের বংশ বাঙ্গালায় কত বিস্তৃত, তাহা রাঢ়ীয় কুলীনগণ জানেন। এক একখানি ক্ষুদ্র গ্রামেও পাঁচ সাত ঘর পাওয়া যায় ; কোন কোন বড় গ্রামে তাহাদিগের সংখ্যা অগণ্য। যে বলিবে যে, সমগ্র বাঙ্গালায় একাদশ শত ঘর মাত্র নীলকণ্ঠ ঠাকুরের সন্তান বাস করে, সে অন্যায় বলিবে না । কিন্তু কয় পুরুষ মধ্যে এই বংশবৃদ্ধি হইয়াছে ? বহুসংখ্যক নীলকণ্ঠ ঠাকুরের সন্তানের সঙ্গে বৰ্ত্তমান লেখকের পরিচয়, বন্ধুত্ব এবং কুটুম্বিতা, আছে। তঁহারা নীলকণ্ঠ হইতে কেহ সপ্তম, কেহ অষ্টম, কেহ নবম