পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৩

ferstofres ১২৪৫ বঙ্গাব্দের ১৩ই আষাঢ়, মঙ্গলবার, ( ১৮৩৮ খ্ৰীষ্টাব্দ, ২৬এ জুন )। রাত্রি ৯টায় স্টাটালপাড়ায় বঙ্কিমচন্দ্ৰ জন্মগ্রহণ করেন । বাংলা সাহিত্য-পঞ্জীতে সেটি স্মরণীয় দিন-- ঐ দিন আকাশে কিন্নর-গন্ধৰ্বেরা নিশ্চয়ই দুন্দভিধ্বনি করিয়াছিল-দেববালার অলক্ষ্যে পুষ্পবৃষ্টি করিয়াছিল—স্বৰ্গে মহোৎসব নিম্পন্ন হইয়াছিল। এই বৎসরের ১৩ই আষাঢ় বঙ্কিমচন্দ্রের জন্ম-শতবার্ষিকী। এই শতবার্ষিকী সুসম্পন্ন করিবার জন্য বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষৎ নানা উদ্যোগ-আয়োজন করিতেছেন-দেশের প্রত্যেক সাহিত্য-প্ৰতিষ্ঠানকে এবং বিশিষ্ট সাহিত্যিকদিগকে উৎসবের অংশভাগী হইবার জন্য আমন্ত্রণ করা হইতেছে। সারা বাংলা দেশে বেশ সাড়া পড়িয়া গিরাছে। বঙ্গের বাহিরেও নানা স্থান হইতে সহযোগের প্ৰতিশ্রুতি পাওয়া যাইতেছে । পরিষদের নানাবিধ আয়ােজনের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য—বঙ্কিমচুন্দ্রের যাবতীয় রচনার একটি প্ৰামাণিক ‘শতবার্ষিক সংস্করণ’-প্ৰকাশ। বঙ্কিমচন্দ্রের সমগ্র রচনা-বাংলা ইংরেজী, গদ্য পদ্য, প্ৰকাশিত অপ্ৰকাশিত, উপন্যাস, প্ৰবন্ধ, নিবন্ধ, চিঠিপত্রের একটি নিভুল ও Scholarly সংস্করণ প্রকাশের উদ্যম এই প্রথম-১৩০০ বঙ্গাব্দের ২৬এ চৈত্ৰ ভঁাহার লোকান্তরপ্রাপ্তির দীর্ঘ পািয়তাল্লিশ বৎসর পরে-করা হইতেছে ; এবং বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষৎ যে এই সুমহৎ কাৰ্য্যে হস্তক্ষেপ করিয়াছেন, তজ্জন্য পরিষদের সভাপতি হিসাবে আমি গৌরব বোধ করিতেছি। পরিষদের এই উদ্যোগে বিশেষভাবে সহায়ক হইয়াছেন, মেদিনীপুর ঝাড়গ্রামের ভূম্যধিকারী কুমার নরসিংহ মল্লদেব বাহাদুর। র্তাহার বরণীয় বদ্যান্যতায় বঙ্কিমের রচনা প্ৰকাশ সহজসাধ্য হইয়াছে । তিনি সমগ্র বাঙালী জাতির কৃতজ্ঞতাভাজন হইলেন। এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের জিলা ম্যাজিষ্ট্রেট শ্ৰীযুক্ত বিনয়রঞ্জন সেন মহাশয়ের উদ্যমও উল্লেখযোগ্য । শতবার্ষিক সংস্করণের সম্পাদন-ভার ন্যস্ত হইয়াছে শ্ৰীযুক্ত ব্ৰজেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্ৰীযুক্ত সজনীকান্ত দাসের উপর। বাংলা সাহিত্যের লুপ্ত কীর্তি পুনরুদ্ধারের কাৰ্য্যে র্তাহারা ইতিমধ্যেই যশস্বী হইয়াছেন। বর্তমান সংস্করণ সম্পাদনেও তাঁহাদের প্রভূত নিষ্ঠা, অক্লান্ত অধ্যবসায় এবং প্রশংসনীয় সাহিত্য-বুদ্ধির পরিচয় মিলিবে। তঁাহারা বহু অসুবিধার মধ্যে এই বিরাট দায়িত্ব গ্ৰহণ করিয়াছেন, এই নিমিত্ত বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষদের পক্ষ হইতে আমি উভয়কে ধন্যবাদ ও আশীৰ্বাদ জানাইতেছি ।