পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৩০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वङ्गलद्र कश् RS6ł মগধের অধীশ্বর চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় বিখ্যাত গ্ৰীক ইতিহাসবেত্তা মেগাস্থিনিস, গাঙ্গারিডি Gangaridae নামে এক জনপদ বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। ঐ জনপদের স্থাননির্ণয়ে তিনি এইরূপ লিখিয়াছেন যে, যেখানে গঙ্গা উত্তর হইতে দক্ষিণবাহিনী, সেইখানে গঙ্গা ঐ জনপদেব পূর্বসীমা । তাহা হইলেই এক্ষণে যে প্রদেশকে রাঢ়দেশ বলা যায়, বাঙ্গালার সেই দেশ ইহা দ্বারা বুঝাইতেছে। বাস্তবিক অনুধাবন করিয়া দেখিলে বুঝা যাইবে যে, মেগাস্থিনিসের ঐ Gangaridae শব্দ গঙ্গারাঢ়ী শব্দের অপভ্ৰং মাত্র। গঙ্গার উপকূলবৰ্ত্তী রাষ্ট্রকে লোকের গঙ্গারাষ্ট্র বলাই সম্ভব-সুরাষ্ট্র (সুরাট ), মধ্যরাষ্ট্র ( মোবাড়), গুর্জররাষ্ট্র (গুজরাট ) প্রভৃতি দেশের নাম যেরূপ রাষ্ট্র শব্দ সংযোগে নিম্পন্ন হইয়াছে, ইহাও সেইরূপ দেখা যাইতেছে। গঙ্গারাষ্ট্র শব্দের অপভ্রংশে ক্ৰমে গঙ্গারাষ্ট্র বা গঙ্গারাঢ় হইবে । ক্রমে সংক্ষেপার্থ গঙ্গা শব্দ পরিত্যক্ত হইয়া রাষ্ট্র শব্দ বা রাঢ় শব্দ প্ৰচলিত থাকিবে । সংক্ষেপার্থে গঙ্গা শব্দ এরূপ পরিত্যক্ত হইয়া থাকে। উদাহরণ, “গঙ্গাতীরস্থ” শব্দের পরিবর্তে অনেকে “তীরস্থ” বলে । ত্ৰিহুতের প্ৰাচীন সংস্কৃত নাম “তীরভুক্তি”। এ স্থলেও গঙ্গা শব্দ পরিত্যাগ হইয়া কেবল “তীর” শব্দ আছে। গঙ্গারাঢ়ও সেই জন্য এখন “রাঢ়” শব্দে দাড়াইয়াছে। মেগাস্থিনিসের কথায় আমরা ইহাই বুঝিতে পারি যে, তৎকালে এই রাঢ়দেশ একটি পৃথগ্রাজ্য ছিল। মেগাস্থিনিসূ বলেন যে, এই রাজ্য এরূপ প্রতাপান্বিত ছিল যে, ইহা কখন কোন শত্রু কর্তৃক পরাজিত হয় নাই এবং অন্যান্য রাজগণ গঙ্গারাঢ়ীদিগের হস্তি-সৈন্যের ভয়ে তাহাদিগকে আক্রমণ করিতেন না । তিনি ইহাও লিখিয়াছেন যে, স্বয়ং সৰ্ব্বজয়ী আলেগ জাণ্ডার গঙ্গাতীরে উপনীত হইয়া গঙ্গারাঢ়ীদিগের প্রতাপ শুনিয়া, সেইখান হইতে প্ৰস্থান করিলেন। বাঙ্গালীর বলবীৰ্য্যের ভয়ে আলেগ জাণ্ডার যুদ্ধে ক্ষান্ত হইয়াছিলেন, এ কথা কেহ বিশ্বাস করুন, বা না করুন, ইহার সাক্ষী স্বয়ং মেগাস্থিনিস্। আমরা নুতন সাক্ষী শিখাইয়া আনিতেছি না । অনেকে বলিবেন যে, কৈ, প্ৰবলপ্রতাপান্বিত গঙ্গারাঢ়ীদিগের নাম কখন আমরা কেহ পূৰ্ব্বে শুনি নাই। যখন মার্সমান প্রভৃতি ইংরেজ ইতিহাসবেত্তাদিগের কাছে আমরা স্বদেশের ইতিহাস শিখি, তখন গঙ্গারাঢ়ীর নাম আমাদের শুনিবার সম্ভাবনা কি ? কিন্তু গঙ্গারাঢ়ী নাম আমরা নূতন গড়িলাম না, তাহার ঐতিহাসিক প্রমাণ দিতেছি। যেখানে দেখিতেছি যে, যে প্রদেশবাসী দিগকে মেগাস্থিনিসূ Gangaridae বলেন, সেই প্ৰদেশবা, সাদিগকেই লোকে এখন রাঢ়ী বলে, আমাদের বিবেচনায় গঙ্গারাঢ়ী নামের ঐতিহাসিকতা সম্বন্ধে ইহাই যথেষ্ট প্রমাণ। কিন্তু আমরা কেবল সে প্রমাণের উপর নির্ভর কািরয়া এ নাম ব্যবহার করিতেছি না । অনেকে অবগত আছেন, মাকেঞ্জির